বাংলাহান্ট ডেস্ক : এ যেন ঠিক ‘দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ’। বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থা তৃণমূলে অনেকটা যেন প্রহ্লাদেরই মতো। কাটমানি ও দুর্নীতি নিয়ে আশিসবাবুর করা এক মন্তব্যে বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল। সোমবার রামপুরহাটে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি সভায় আশিসবাবু দলীয় নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে খোলাখুলি মন্তব্য করে বসেন। দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে পরামর্শও দেন তাঁদের। যা শুনে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরাও।
সোমবার আশিসবাবু বলেন, ‘আমি কাউকে সৎ হতে পরামর্শ তো দিতে পারিনা। আমি বলতে পারব না, আপনি পৌরসভার টাকাটা মারবেন না। আপনি পঞ্চায়েতের টাকাটা মারবেন না। আপনি মেম্বার, আপনি কারও কাছে কাটমানি খাবেন না। এটা হচ্ছে আমার উপদেশ। কিন্তু এটা কার্যকরী হয় না কখনই’।
দলের নেতাকর্মীদের তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আপনি বলুন না মা তারার মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে, পিরবাবার মাজারের সামনে দাঁড়িয়ে বুকে হাত দিয়ে বলবেন, আমি এক কাপ চা কোনওদিন খাব না কারও কোনও কাজের বিনিময়ে। আমি কোনও অন্যায় করব না, একটাও অন্যায় কথা বলব না। কাউকে ফাঁসানোর জন্য কখনও মিথ্যা কথা বলব না। কাউকে আমি টার্গেট করে এগিয়ে যাব না। এটা তো বলতে পারবেন? রাজনীতিতে এই সততাটা থাকবে না?’
আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে বীরভূম জেলার বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘আশিসবাবুর বক্তব্যেই স্পষ্ট তৃণমূলের নিচুতলার নেতারা শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেও দুর্নীতির সঙ্গে আপোশ করতে তৈরি নয়। আশিসবাবু যদি জানেন কোন নেতা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাহলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার কেন করছেন না? আসলে তাণ্ডবকারী, দুর্নীতিগ্রস্তদের সামনে হাতজোড় করে থাকাটা তৃণমূলেরই প্রাচীন সংস্কৃতি।’
সিপিএমের পক্ষ থেকে আবার বলা হচ্ছে, ‘কাটমানি আর দুর্নীতি না থাকলে তৃণমূল দলটাই ৭ দিনে উঠে যাবে। দলের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত। যে দলের শীর্ষনেতার বিরুদ্ধেই গরু পাচার, কয়লা পাচার, সোনা পাচার, শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সেই দলের নীচুতলার কর্মীরা কী করছেন তা বোঝাই যাচ্ছে। উঁচুতলার পাচারকারী নেতাদের কথা নিচুতলার কর্মীরা শুনবেনই বা কেন? আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় স্তর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।