ডিগ্রি থাকেলেও বেকার! বাধ্য হয়ে পদ ছেড়ে কাজের খোঁজে গুজরাট যাচ্ছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সংসারে চলছে অনটন। এমনকি কাজ একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিন বছর ধরে অসুস্থতার কারণে বাবা গৃহবন্দী থাকার কারণে খরচ বেড়ে চলেছে আর এই অবস্থায় অবশেষে পঞ্চায়েত সদস্যের পদ ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিক হওয়ার পথে অগ্রসর হতে চলেছেন তৃণমূল নেতা!। শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অমিত ভট্টাচার্যের এই সিদ্ধান্তটি বর্তমানে জানাজানি হওয়ার পরেই শাসকদলকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি।

তবে আচমকা অন্য রাজ্যে চাকরি করতে যাওয়ার ভাবনা এলো কোথা থেকে, এ বিষয়ে অমিত ভট্টাচার্য জানান, “তিন বছর ধরে বাবার শরীর খুব খারাপ। আমাদের একটি জিম ছিল, কিন্তু করোনার সময় থেকে এটি একপ্রকার বন্ধ রয়েছে। মানুষের যাতায়াতও নেই। তাই সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। আমার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে, তবে এলাকাতে কোন কাজ নেই। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সুরাটে গিয়ে বস্ত্রশিল্পের যদি কোনরকম কাজ পাওয়া যায়, সেটাই করব।”

অমিতের রাজনৈতিক কেরিয়ারও বেশ চমকপ্রদ। বিজেপি দলের হয়ে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করে পঞ্চায়েত ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। এরপরে অবশ্য পদ্মফুল ছেড়ে তৃণমূল শিবিরে যোগদান করেন অমিত। তবে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে গুজরাটে রওনা দেওয়ার পর পঞ্চায়েতের দায়িত্ব কে সামলাবে, সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আর এরমাঝেই শাসক দলকে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।

image 67488

বাংলায় কাজের অভাব রয়েছে এবং সেই কারণে প্রচুর যুবক বর্তমানে বেকার হয়ে পড়েছে, এই অভিযোগ বহুদিন ধরেই করে আসছে বিরোধীরা আর অমিতের গুজরাটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তাদের সেই দাবিকেই একপ্রকার মান্যতা দিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে এদিন আলিপুরদুয়ার জেলার বিজেপির সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, “বাংলায় কাজ নেই, সেই কারণে একাধিক যুবক বেকার হয়ে পড়েছে। অমিতও তাদের মধ্যে একজন। সেইজন্যই পঞ্চায়েতের দায়িত্ব ছেড়ে অন্য রাজ্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও।”

যদিও বিরোধীদের এই সকল দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল নেতা ভাস্কর মজুমদার। তিনি জানান, “আমাদের রাজ্যে বেকারত্বের হার অনেক কম। অন্তত দেশে এমন অনেক রাজ্য আছে, যাদের তুলনায় আমাদের এখানে কাজের চাহিদা বেশি।” তবে বর্তমানে তাঁর ফেলে যাওয়া পঞ্চায়েতের সদস্যপদ সামলানোর ব্যাপারে অমিত জানান, “আমার জায়গায় অন্য কোনো সুপারভাইজার এই পদ সামলে নেবে।”

যদিও অমিতের বাংলা ছেড়ে গুজরাটে যাওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানেন না খোদ শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানই। ফলে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দলের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েতের সদস্যপদের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হয়, সেটাই বড় প্রশ্ন।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর