দল চালাতে টাকা নিতে হয়! তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের মন্তব্যে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেফাঁস মন্তব্য করে গোটা দলকে অস্বস্তির মধ্যে ফেললেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির গোহ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রিঙ্কু ঘোষ। সম্প্রতি তিনি একটি মন্তব্য করে বলেন, ‘দল চালাতে গেলে টাকা নিতে হয়। দলের অনেক খরচ আছে।” ওনার এই বক্তব্যের পর বিরোধী শিবির আবারও কাটমানি প্রসঙ্গ তুলে এনে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে। আরেকদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় কড়া ভাষায় জানিয়েছেন যে, যারা টাকা নিতে গিয়ে ধরা পড়বে, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে গলসিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক পারদ চড়েছে। গোহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিমল ভক্ত বলেন, পঞ্চায়াতের প্রধান রিঙ্কু ঘোষ চাইছেন যে টেন্ডার প্রক্রিয়া অনলাইনের বদলে অফলাইনে হোক। বিমল ভক্ত বলেন, প্রধান দাবি করেছেন যে, অফলাইনে টেন্ডার ডাকা হলে কাজ তাড়াতাড়ি হবে এই কথা ওনাকে বিডিও সাহেব বলেছেন। যদিও, পরে প্রধান কথা ঘুরিয়ে বলেন যে, এটা বিডিও না দলের অন্য নেতারা বলেছেন।

বিমলবাবু বলেন, আসলে অফলাইনে টেন্ডার ডাকা হলে অনেক নেতার সুবিধা হবে। নিজেদের পছন্দমতো কন্ট্রাক্টরদের কাজ দিয়ে সেখান থেকে ভালো পার্সেন্টেজ নেওয়া যাবে। অনলাইনে হলে এটা করা সম্ভব হবে না। কিন্তু আমরা এসব চাইছি না, আমরা চাইছি পঞ্চায়েতের কাজ স্বচ্ছ পরিস্কার ভাবে হোক। লকডাউনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ আটকে ছিল। দলের কিছু মানুষ প্রধানের কান ভরছেন, আর প্রধানও তাঁদের কথা মতো চলছেন।”

উপপ্রধান বিমলবাবুর অভিযোগের পর প্রধান রিঙ্কু ঘোষ বলেন, ‘দল চালাতে গেলে টাকা লাগে, দলের একটা খরচ আছে। পার্টি ফান্ডে টাকা রাখা হয়। পার্টির অনেক কিছুই দরকার। তবে এটা কাটমানি নয়। কোনও প্রকল্পের জন্য ২০-৩০ হাজার টাকা নিলে সেটাকে কাটমানি বলে। এটা সেটা নয়। দল চালাতে টাকা লাগে সবাই জানে। টাকা নেওয়ার জন্যই কি অফলাইনে করা হচ্ছিল নাকি জানিনা। অফলাইনে করলে যে টাকা নেওয়া যায়, সেটা আমার জানা ছিল না।”

মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেন, ‘যারা টাকা নেবে আর ধরা পড়বে, তাঁদেরকে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। তাঁদের পদও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। আমার কাছে নিচু লেভেলের খবর আসেনা। এটা নিয়ে জেলা নেতৃত্ব বলতে পারবেন। তবে টাকা নেওয়ার খবর আমার কানে আসলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর