বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chaterjee) গ্রেফতারি এবং তার পরবর্তী সময় একের পর এক বিতর্ক উঠে আসায় ক্রমশ সরগরম হয়ে পড়েছে বঙ্গ রাজনীতি। দীর্ঘ ২৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর এদিন সকালে অবশেষে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) মহাসচিব তথা প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আর এবার এই ঘটনার প্রতিবাদে অবশেষে পথে নামল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন দুপুরের পর পশ্চিম বর্ধমানের (Burdwan) কুলটির জিটি রোড অবরোধ করে তৃণমূল কর্মীরা। এই প্রতিবাদ সংগঠিত হয় কুলটির প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান বাচ্চু রায়ের নেতৃত্বে। তাদের দাবি, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই গ্রেফতারি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছি আমরা।”
উল্লেখ্য, এদিন সকালে দীর্ঘ জেরার উপর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। ইতিমধ্যে তাঁকে আদালতে তোলা হয়েছে আর এ ঘটনা মাঝে এদিন পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি এলাকায় লছিপুর গেটে জিটি রোড অবরোধ করে তৃণমূল কর্মীরা এবং তাদের নেতৃত্বে থাকেন প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান বাচ্চু রায়। যদিও আধঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধ পরবর্তীকালে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
পরবর্তীকালে বাচ্চু রায় জানান, “আমাদের বাংলার উপর সিবিআই ও ইডিকে যেভাবে লেলিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী, তার সম্পূর্ণটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়ে চলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার জন্য এ সকল ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা। আমাদের নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হলো অথচ তাঁর বাড়ি থেকে কিন্তু কিছু মেলেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে, তার কোনও স্পষ্ট কারণ জানা যায়নি। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি।”
এরপরেই তিনি বলেন, “সারদা মামলায় সুদীপ্ত সেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযোগ এনে চলেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? আমরা এই বঞ্চনা মানবো না।”
প্রসঙ্গত, গতকাল স্কুল সার্ভিস কমিশন দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পরবর্তীতে পার্থ ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ২১ কোটি টাকা নগদ এবং একাধিক সোনা গয়না, বিদেশি মুদ্রা এবং ২০ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সেই প্রসঙ্গেই এদিন অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। এক্ষেত্রে অর্পিতার বাড়ি থেকে পাওয়া অর্থের সঙ্গে এসএসসি মামলার যোগ রয়েছে বলেই অনুমান তাদের।
তবে অপরদিকে আবার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে কিছু না মিললেও তাঁকে কেবলমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণ করার স্বার্থে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফলে পরবর্তী সময় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পদক্ষেপ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ মাঝে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন কোন মোড় আসে, সেটাই বর্তমানে প্রশ্নের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।