বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সপ্তাহের শুরুতেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের এক রায়ে চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৫৩ জন। দেখতে দেখতে পাঁচ দিন কেটে গেলেও এই নিয়ে চর্চা অব্যাহত। এবার এই আবহে সংবাদের শিরোনামে উঠে এল বাম আমলের এক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির (Teacher Recruitment Scam) খবর। সেবার ১৯৯৩ সালের প্যানেল বাতিল করে কলকাতা হাই কোর্ট।
দুর্নীতি কাঁটায় বহুবার তৃণমূলকে (TMC) বিদ্ধ করেছে সিপিএম (CPM)। পাল্টা তৃণমূলের তরফ থেকেও বাম জমানায় দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে সিপিএম একাধিকবার সেই অভিযোগ নস্যাৎ করেছে। এবার তাই রীতিমতো ‘প্রমাণ’ সহ সিপিএমকে নিশানা করল তৃণমূল। রবিবার তাদের ছাত্র সংগঠনের একাংশের তরফ থেকে ১৯৯৬ সালে অভিভক্ত মেদিনীপুরে একটি নিয়োগ প্যানেল বাতিলের সংবাদ সমাজমাধ্যমের পাতায় তুলে ধরা হয়।
২০১২ সালে কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া একটি রায়ে ২২০০ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল হয়। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের নির্দেশে বাতিল হয় প্যানেল। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সহ সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী সমাজমাধ্যমের দ্বারা সেই খবর জনসমক্ষে তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৯৯৩ এবং ১৯৯৬ সালে অবিভক্ত মেদিনীপুরের ২২০০ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করেছিল হাই কোর্ট। তখন বিচারপতি দিলীপ বসু ও পরবর্তীকালে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুনঃ হতে চান রাজসাক্ষী! CBI-কে অস্ত্রের খোঁজ দিয়েছিল শাহজাহানের নিজের ভাই! ‘ফাঁস’ গোটা ঘটনা
আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। এরপর পুরনো তালিকা বাতিল করে নতুন করে তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। শুরুর দিকে বাম সরকারের তরফ থেকে হাই কোর্টের এই নির্দেশ না মানা হলে আদালত অবমাননার মামলাও হয়।
রাজ্যের তৎকালীন সরকারি কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে স্পষ্ট করে না বলতে পারলেও তিনি দুর্নীতির কথা স্বীকার করে নেন। অশোক বলেন, কংগ্রেস-সিপিএম সব আমলেই দুর্নীতি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘তখনকার দিকে এত চোখ-কান-নাক-মুখ খোলা থাকতো না তো’। সেই সঙ্গেই এই নির্দিষ্ট মামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘অনেকদিন হয়ে গিয়েছে, কিছু মনে নেই। তাছাড়া মামলার নথি না দেখে এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না’।
বাম আমলের এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলা প্রসঙ্গে আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৯৯৩ সালে অবিভক্ত মেদিনীপুরের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিষদ সম্পূর্ণ জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য ২২০০ চাকরিপ্রার্থীর লিস্ট তৈরি করে। তবে সেই তালিকার বৈধতা নিয়ে সেই বছরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রায় ৮১ জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের আইনজীবী সিরাজ গুপ্তদের দাবি ছিল, ‘যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি না দিয়ে কম যোগ্যতার সিপিএম ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল’। এবার এই মামলা নিয়েই বামেদের তোপ দাগলেন প্রান্তিক।