বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরুলিয়ার (Purulia) এক তৃণমূল উপপ্রধান কাজ করেন গ্যারেজে। মিষ্টি মহল এলাকার এই গ্যারেজে তৃণমূল (Trinamool Congress) উপপ্রধান বহু বছর ধরে সারাচ্ছেন বাইক (Bike) ও গাড়ি (Car)। পুরুলিয়া শহরে গাড়ির মিস্ত্রি হিসেবে তিনি প্রসিদ্ধ। এলাকাবাসীও তাই খুব ভালোবাসেন তাকে। এই তৃণমূল উপপ্রধান তথা গাড়ি মিস্ত্রির নাম লম্বদর মাহাতো। এলাকায় তিনি পরিচিত লম্বু মিস্ত্রি নামে।
লম্বদর মাহাতো বরাবাজারে তৃণমূল পরিচালিত ভাগাবাঁধ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। এই পদে তিনি রয়েছেন গত পাঁচ বছর ধরে। ভোটে জেতার পরও লম্বদর প্রতিদিন নিয়ম করে আসেন গ্যারেজে। সারাই করেন বাইক ও গাড়ি। তার গ্যারেজে বাইক সারাই করতে দেন সিপিআইএম-বিজেপি-কংগ্রেস সব দলের নেতা-কর্মীরাই।
গ্রামবাসীরা বলছেন, যে সময় রাজ্যে একের পর এক নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতির খবর সামনে আসছে সেই সময় লম্বু মিস্ত্রি ব্যতিক্রম। দামি বাড়ি-গাড়ি তো দূরের কথা, ভালো পোষাক অব্দি নেই তার। সারাদিন কাটিয়ে দেন কালি মাখা জামা পরেই। কাজ শেষে ফিরে যান ছোট্ট মাটির বাড়িতে। নেতা সুলভ কোন বাহুল্যতা তার জীবনে নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
লম্বদর মাহাতো বলছেন, এলাকাবাসীর অনুরোধেই তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর ভোটে জয়লাভ করলেও তার জীবন যাত্রার কোনও পরিবর্তন হয়নি। রোজ সকাল ন’টা পর্যন্ত তিনি সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেন। এরপর বাড়ি থেকে কুড়ি কিলোমিটার দূরে এই গ্যারেজে আসেন কাজে। এরপর সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কাজ করে ফিরে যান বাড়ি।
গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হয়েও কেন এত পরিশ্রম করেন তিনি? লম্বদর মাহাতোর স্পষ্ট উত্তর, পাঁচ বছরের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তখন কি হবে? কাস্টমাররা চলে যাবে আর হারিয়ে যাবে গাড়ি সারানোর অভ্যাস। লম্বদর জানান, পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট ভাতা ছাড়া আর কিছুই পান না তিনি। কষ্টের মধ্যেই দিন চলে যায় তার। আগে যেমনভাবে চলত এখনও সেই ভাবেই দিন চলছে।