‘ন্যায্য’ তোলা দেয়নি কারখানা, তাই ‘শাস্তি’ দিতে আধিকারিককে রাস্তায় ফেলে মারধর তৃণমূল কর্মীদের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কাটমানির ( Cut Money) বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) একাধিক বার বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু তাতে যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি তা বলাই বাহুল্য। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনায় তা আরও একবার প্রমাণিত। পার্টির ছেলেদের দাবিমতো তোলা দেয়নি বেসরকারি কারখানা। তাই সেই কারখানার এক আধিকারিককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটালো কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার (Bankura) জেলার গঙ্গাজলঘাটি থানার চৌশাল এলাকায়। আহত রামপদ কর্মকার নামের ওই কারখানার আধিকারিক গঙ্গাজলঘাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষের থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল রাতে সেই তিন অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা যাচ্ছে। ধৃতদের নাম গোপাল গড়াই, ভোলানাথ মণ্ডল এবং মহাদেব মণ্ডল। তারা প্রত্যেকেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হবে বলে সূত্রে খবর।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিল্পক্ষেত্রে গোলমাল না পাকানোর জন্য দলীয় কর্মীদের একাধিকবার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরেও শুধুমাত্র নিজেদের দাবিমতো তোলা না পাওয়ায় এক কারখানার আধিকারিককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় বাঁকুড়ার শিল্প ও ব্যবসায়ী মহলে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ওই কারখানার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কর্মী গত কয়েকদিন ধরেই কারখানা থেকে তোলা দাবি করে আসছিল। সোজা কথায় তোলা না দেওয়ায় কারখানা কর্তৃপক্ষকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয় তারা। গতকাল দুপুরে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে একটি গাড়িতে চেপে কারখানায় যাচ্ছিলেন মার খাওয়া সেই আধিকারিক রামপদ কর্মকার। কিন্তু কারখানায় ঢোকার একটু আগে জনা দশেক বাইক আরোহী তাঁদের গাড়ি আটকায়। জোর করে গাড়ি থেকে নামায় রামপদ কর্মকারকে। এরপর রাস্তায় ফেলে চলে বেধড়ক মার। হামলাকারীদের কয়েকজনকে চিনতে পরে তাদের বিরুদ্ধে গঙ্গাজলঘাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তিন অভিযুক্ত এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত হওয়ায় রীতিমতো অস্বস্তিতে শাসক দল।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে উল্টো সুর গায় তিন অভিযুক্ত। তারা দাবি করে, তোলা নয় বরং কাজ চাইতে গিয়েছিল তারা। কোনো মারধরের ঘটনাই নাকি ঘটেনি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কাজ চাইতে গেলে কোন আধিকারিক এভাবে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়? পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সত্যতা খুব তাড়াতাড়ি সামনে আসবে বলে বিশ্বাস কারখানা কর্তৃপক্ষের।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর