বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নারদ কান্ডে এই মুহূর্তে ফের একবার সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ২০১৬ সালে ম্যাথু স্যামুয়েলের করা স্টিং ফুটেজে সরাসরি টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল তৎকালীন বেশকিছু তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিকে। তারপর থেকেই তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তবে বাংলার নির্বাচনী ফল প্রকাশের পরেই ফের একবার তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলো নারদ কান্ড। সোমবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয় রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। তাদের নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসার পরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের দপ্তরের সামনে কার্যত ধরনায় বসেন তিনি। ইতিমধ্যে নারদ কান্ডে যুক্ত হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নামও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ঘটনাকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে সিবিআই তরফে। সিবিআই তরফেই জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
সোমবারই এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনও জানিয়েছিলেন তারা। তাদের মতে, মামলাকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। না হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যরা বিচারে প্রভাব ফেলতে পারেন। আজ বেলা দুটোই রয়েছে এই মামলার শুনানি। এদিনই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কলকাতা হাইকোর্ট।
তবে ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের এফআইআর দায়ের করা হলো তৃণমূল তরফেও। এদিন গড়িয়াহাট থানায় সিরিয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তৃণমূল। ১৬৬, ১৬৬এ, ৩৪ এবং ১৮৮ ধারায় রুজু হয়েছে মামলা। আজ তৃণমূলের তরফে এই মামলা দায়ের করেন বিধায়ক চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। উল্লেখ্য, সরকারি নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করলে মামলা করা হয় ১৬৬ এবং ১৬৬এ ধারায়। এছাড়া রয়েছে মহামারী আইনও। মহামারীর সময় এইচআর হেভিওয়েট নেতাকে এভাবে গ্রেপ্তার করা আসলে রাজ্যকে বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া বলেই মনে করেছে তৃণমূল। আর সেই কারণেই এই ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। অন্যদিকে রয়েছে ধারা ৩৪। অর্থাৎ একই উদ্দেশ্যে অপরাধ ঘটানো। একের পর এক হেভিওয়েট নেতাকে যেভাবে মহামারীর সময় গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। তার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব ছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
ইতিমধ্যে একাধিক নেতা দাবি করেছেন এ আসলে এক গভীর ষড়যন্ত্র। একই দাবি তুলেছেন অসুস্থ মদন মিত্রও। এই মুহূর্তে এই এফআইআর দায়ের করায় ফের একবার নতুন মোড় নিল নারদ কান্ড। ইতিমধ্যেই রাজ্যে নারদ কান্ড নিয়ে উত্তেজনা চরমে। গ্রেপ্তার হয়েছেন একের পর এক হেভিওয়েট নেতা, নাম জড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তৃণমূলের এই এফআইআর দায়ের করার পর ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।