বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রায় ৬ মাস আগে আফগানিস্তানকে নিজেদের দখলে নিয়েছে তালিবান। তারপর থেকেই বিভিন্ন সব কারণের জন্য প্রায়ই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে আফগানিস্তান। তালিবানদের আক্রমণে রীতিমতো জর্জরিত হয়ে পড়েছেন সে দেশের মানুষ।
ক্ষমতার দখল নিয়েই তালিবান জানিয়েছিল যে, দেশকে ড্রাগ বা মাদক মুক্ত করতে উদ্যোগী হবে তারা। পাশাপাশি, সেজন্য অভিনব উপায়ও অবলম্বন করতে দেখা যায় তাদের। যার ফলে দেশের অধিকাংশ মাদকাসক্তকে তিন মাসের জন্য একটি রিহ্যাবে ভরেছে তালিবানরা।
এদিকে, রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সেই নেশামুক্তি কেন্দ্র বা রিহ্যাবে রয়েছে চূড়ান্ত অব্যবস্থা। পাশাপাশি, নেই খাওয়ারের জোগানও। এক-একটি খাটে থাকতে হচ্ছে তিনজনকে। শুধু তাই নয়, খিদে মেটাতে কখনও ঘাস খেয়ে, আবার কখনও খালি পেটেই দিন গুজরান করতে হচ্ছে রিহ্যাবে থাকা আফগানদের।
কেউ কেউ আবার পেটের জ্বালা মেটাতে বিড়াল মেরে গোটা মাথা চিবিয়ে খাচ্ছে। তবে, এখানেই শেষ নয়, খিদের জ্বালায় মানুষের মাংসও খাচ্ছে তারা। রীতিমতো কল্পনাতীত এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
সম্প্রতি ডেনমার্কের এক সাংবাদিক রিহ্যাব থেকে ছাড়া পাওয়া আবদুল নামের জনৈক এক আফগান ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনিই রিহ্যাবের অন্দরে থাকা ওই ভয়ঙ্কর পরিবেশের কথা তুলে ধরেন। জানা গিয়েছে, সপ্তাহে দু-তিনদিন না খেয়ে কাটাতে হত তাঁদের। পেট ভরাতে রিহ্যাবের মাঠের ঘাস পর্যন্ত খেয়েছে তাঁরা। তবে যত দিন যাচ্ছে তত অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বদ্ধ পরিবেশে তীব্র অপরিচ্ছন্ন থাকা অবস্থায় খিদের জ্বালা মেটাতে কয়েকজন মিলে একটি বিড়ালকে হত্যা করে বলেও জানান আবদুল। তার পর বিড়ালটির মাথা কাঁচা চিবিয়ে খায় এক মাদকাসক্ত। এমনকি, পেটের জ্বালায় এক বন্দীকে হত্যা করে মাদকাসক্তরা। তার পর আগুনে ঝলসে তার মাংস খেয়ে পেট ভরিয়েছিল সকলে। স্বাভাবিকভাবেই এই পাশবিক অবস্থার কথা প্রকাশ্যে আসতে রীতিমতো শিউরে উঠেছেন সবাই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বিশ্বে নিষিদ্ধ মাদকের অন্যতম বড় জোগানদাতা হল আফগানিস্তান। এই প্রসঙ্গে “ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিস”-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ক্ষমতায় এসে আফিম চাষে লাগাম টানার কথা ঘোষণা করেছিল তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ।
কিন্তু পরে দেখা যায় যে, আন্তর্জাতিক ত্রাণ পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র লোক দেখানো প্রতিশ্রুতি ছিল সেটি। বর্তমানে আফগানিস্তানে তৈরি হওয়া আফিম থেকে পাকিস্তানের ল্যাবরেটরিতে বিশাল পরিমাণের হেরোইন তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, তা পৌঁছে যাচ্ছে সরাসরি ইউরোপের বাজারেও। এদিকে, এর ফলে আফগানিস্তানে ক্রমশ সস্তা হচ্ছে মাদক। ফলে সে দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যাও।