বাংলাহান্ট ডেস্কঃ জগদ্ধাত্রী দেবী (Jagaddhatri Devi) দুর্গার অপর রূপ। উপনিষদে তাঁকে আমরা উমা হৈমবতী নামেই জানি। বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরাণ গ্রন্থেও জগদ্ধাত্রী দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। জগদ্ধাত্রী দেবীর আরাধনা বিশেষত বঙ্গদেশেই প্রচলিত আছে। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগর,গুপ্তিপাড়া ও নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী উৎসব জগদ্বিখ্যাত। বিভিন্ন স্থান থেকে অগণিত ভক্ত আসেন দেবীর দর্শনে।
কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় বিধি অনুসারে মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা ও তামসিক কালীর পরের স্থানেই রয়েছেন দেবী জগদ্ধাত্রীর। হাওড়া জেলার মাসিলা গ্রামেও জগদ্ধাত্রী দেবীর পূজা করা হয়।
ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা এবং সিংহবাহিনী হলেন জগদ্ধাত্রী দেবী। শঙ্খ, চক্র, ধনুক ও বাণ গলায় নাগযজ্ঞোপবীতযুক্ত হলেন দেবী জগদ্ধাত্রী। দেবীর বাহন সিংহ এবং দেবীর গাত্রবর্ণ উদিয়মান সূর্যের মত। দুর্গাপূজার ঠিক একমাস পর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী দেবীর পূজা করা হয়।কিছুটা দূর্গা পূজার ধাঁচে জগদ্ধাত্রী পূজা করা হয়। আবার কয়েকটি জায়গায় সপ্তমী থেকে নবমী অবধি এই পূজা করা হয়। কোথাও আবার নবমীতেই তিনদিনের পূজো একত্রে সম্পন্ন করা হয়।
নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকাল থেকেই জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন শুরু হয়। কথিত আছে, ফরাসি সরকারের দেওয়ান চন্দননগরের ইন্দ্রনারায়ণ ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের খুবই ঘনিষ্ঠ। প্রায় আড়াইশো বছর আগে তিনি কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পূজা দেখে মুগ্ধ হন। তখন ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টির নিচুপাটিতে জগদ্ধাত্রী পূজার শুরু করেন। সেই থেকে আজও চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী দেবীর পূজা সাড়ম্বরে প্রচলিত হয়। বহুদূর থেকে দর্শনার্থীরা
আসেন এই পূজা দেখতে।