বাংলাহান্ট ডেস্ক : কেটে গিয়েছে চারটে দিন। এখনও সল্টলেকে সেই একই অবস্থায় প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীরা (TET Qualified Candidates)। চলছে আমরণ অনশন (Hunger Strike) আন্দোলন। এক বিন্দু জলও নামেনি গলা দিয়ে। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এক এক করে। কিন্তু আন্দোলনে অনড় তাঁরা। গলা ভেঙে গিয়েছে। স্বর বেরোচ্ছে না, তার মধ্যেও চলছে স্লোগান।
চাকরির দাবিতে সল্টলেকের করুণাময়ীতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কার্যালয় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র (এপিসি) ভবনের সামনে টেট পাশ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের আমরণ অনশনের আজ চতুর্থ দিন। গত সোমবার শুরু হয়েছে এই আন্দোলন। ইতিমধ্যেই পর্ষদ সভাপতির কড়া প্রতিক্রিয়া, আন্দোলনকারীদের দাবি সম্পূর্ণ অন্যায্য, তা কোনও ভাবেই মানা হবে না। একই সুর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু গলাতেও। তাঁর দাবি, ‘ভূভারতে এমন কোনও দিন হয়েছে? যে একটা প্যানেল বেরিয়েছে, আর প্যানেলের সবাইকেই চাকরি দিয়ে দিতে হবে।’ কিন্তু চাকরির দাবিতে নাছোড় চাকরিপ্রার্থীরা। চতুর্থ দিন দেখা গেল অন্য দৃশ্য। রাস্তায় শুয়ে রয়েছেন একের পর এক চাকরিপ্রার্থী। সাদা কাপড় গায়ে দিয়ে শুয়ে রয়েছেন। নিজেরাই বলছেন, তাঁরা নাকি জীবন্ত লাশ!
করুণাময়ীতে অনশন মঞ্চের পাশে বায়োটয়লেট বসানোর কথা বলেছিলেন বিজেপি নেত্রী তনুজা চক্রবর্ত্তী। সেই বায়োটয়লেট বসাতেই দেয়নি পুলিস। তা নিয়ে বুধবারই এক প্রস্থ ঝামেলা হয়। পুলিসের পক্ষ থেকে জানানো হয় এই কাজের জন্য বিএমসি-র অনুমতি নিতে হবে। সেই বিষয় নিয়েই পুলিশ ও রুদ্রনীল ঘোষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
রাজনৈতিক রং মিশছে আন্দোলনে। কিন্তু এখনও পথেই বসে রয়েছেন ওঁরা। আন্দোলনকারীরা আগেই স্পষ্ট করেছিলেন, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলেরই সদস্য নন। তাঁদের একটাই দল বেকারত্ব। আর তাই হকের চাকরির দাবিতে মরণ পন লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরা। চাকরি, চাকরিপ্রার্থী আর চাকরিদাতা, এই তিন শব্দেও আন্দোলন হচ্ছে জোরদার। এক আন্দোলনকারীর প্রশ্ন, ‘কিছু ক্ষেত্রে তো দেখেছি সরকার ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এক্ষেত্রে কেন হচ্ছে না?’ এক আন্দোলনকারী আক্ষেপ করেই বলেন, ‘আমরা মরেই তো প্রায় গেছি। শেষ লড়াইটা লড়ছি। মরতে হলে এখানেই মরব।’