আজ বসন্তী পঞ্চমী অর্থাৎ সরস্বতী পূজার দিন, আজকের দিনেই এক হিন্দু বালক তার মাথা কাটিয়ে দিয়েও নিজের ধর্মকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু এই বালকের সম্পর্কে অধিকতর হিন্দু জানেন না। সেই হিন্দু বালকের নাম ছিল হাকিকত রায়, যে মাথা কাটিয়ে দিয়েছিল কিন্তু ধর্ম পরিবর্তন করেনি। হাকিকত রায় আজকের পাকিস্থানের শিয়ালকোটে ১৭ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। উনাকে বর্বর মুঘল দ্বারা করা হয়েছিল।
হাকিকত রায় (Haqiqat Rai) একজন হিন্দুবীর বালক ছিলেন, যিনি মুঘলদের দ্বারা চাপিয়ে দেওয়া ইসলামের সামনে মাথা নিচু করতে অস্বীকার করেছিলেন। আসলে কিছু কট্টরপন্থী হিন্দু ধর্মের দেবদেবী সম্পর্কে আপত্তিজনক উক্তি করেছিল, এরপর হাকিকত রায়ও তাদেকে বলেন যে যদি আমি তোমাদের ধর্ম নিয়ে এইসব বলি তাহলে কেমন লাগবে।
তারপর আর কি! মামলা লাহোরের কোতয়ালী পর্যন্ত চলে যায়। মামলা নিয়ে মুঘল শাসন প্রশাসনের দরবারে পৌঁছে যায় কট্টরপন্থীরা। হাকিকত রায় সমৃদ্ধ বাড়ির ছিলেন। উনার বাড়ির লোকজন জাজিয়া ট্যাক্সও(মুঘলরা অমুসলিমদের থেকে যে ট্যাক্স নিত) প্রদান করতেন। হাকিকত রায়ের পরিবার হাকিকত রায়কে মাফ করে দেওয়ার অনুরোধ করেন এবং পরিবর্তে ধনদৌলত প্রদানের কথা বলেন। কিন্তু মুঘল আতঙ্কবাদীরা হাকিকত রায়কে মাফ করতে অস্বীকার করে এবং মৃত্যুর সাজা ঘোষণা করে। এবার যে ঘটনা আপনাদের জানাবো, তা জানার পর আপনারাও ওই ১৪ বছরের বালকের শৌয ও ধর্মের প্রতি দৃঢ় সংকলপকে আপনিও প্রণাম জানাবেন।
যে দিন তাকে মৃত্যু প্রদানের জন্য নিয়ে আসা হলো, সেদিন মুঘলরা তাকে বলে যে তুমি ইসলাম গ্রহণ করে নাও, তাহলে তোমাকে ছেড়ে দেব। হাকিকত রায়ের পরিবারও তাকে ইসলাম গ্রহণ করে নিতে বলেন, যাতে প্রাণ বেঁচে যায়। কিন্তু ১৪ বছরের হাকিকত রায় সবার সামনে গর্জন করে বলে, যদি তোমার আঁকার মধ্যে শক্তি আছে, আর যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আমাকে ইসলাম কবুল করিয়ে দেখাও।
হাকিকত রায় মুঘলদের দ্বারা চাপিয়ে দেওয়া ইসলাম গ্রহণ করতে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন এবং নিজের মাথা কাটিয়ে দেন। আবারও মনে করিয়ে দি, হাকিকত রায়ের বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর।মুঘল আতঙ্কবাদীরা তার মাথা কাটিয়েও নিজের ধর্মের রক্ষা করেন। আজকের দিনেই অর্থাৎ বসন্তী পঞ্চমীর দিন হাকিকত রায় অট্টাচারের বিরূদ্ধে মাথা না ঝুঁকে নিজের বলিদান দিয়ে দেন। দালাল ইতিহাসবিদরা ধৰ্মনিরপেক্ষতার নামে এই বালকের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করলেও আজও ভারতে এই ধৰ্মপ্রাণ হিন্দু বীর বালকের মূর্তিকে পুজো করা হয় এবং তার আত্মাকে প্রণাম জানানো হয়। আজকে যখন সরস্বতী পুজোর দিন কিছু লোকজনের কাছে প্রেম করার দিনে পরিণত হয়েছে, তখন হকিকত রায় এর ঘটনা যেন অন্ধকার ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর কাজ করবে।