বাংলা হান্ট ডেস্ক: ব্যবধান ১৩ বছরের! ২০১০ সালের পর ফের ২০২৩। গত শনিবারে ধোঁয়া উড়িয়ে এবং হুইস্ল বাজিয়ে ছুটে চলল একটা রেলইঞ্জিন (Indian Railways)! যা দেখে ফের আশার সঞ্চার স্থানীয় বাসিন্দাদের। মূলত, দীর্ঘ ১৩ বছর পর ফের গঙ্গার পূর্ব পারে কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ ঘাট রেলপথ বেয়ে ছুটে চলল কোনো ইঞ্জিন। যদিও, নবদ্বীপ ঘাট রেলপথের বাকি কাজ অসমাপ্তই থেকে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, কবে সেই কাজ হবে তা নিয়েও ঘোর অনিশ্চয়তা রয়েছে। মূলত, জমিজটে বন্ধ রয়েছে কাজ। তবে, আগে থেকে ওই রেলপথের যতটুকু পর্যন্ত কাজ হয়েছে সেই অংশেই গত শনিবার বিকেলে ছুটে চলল ডিজেল ইঞ্জিন।
আর তার ওপর ভর করেই প্রায় ১৩ বছর পর আরও একবার কৃষ্ণনগর স্টেশন থেকে পশ্চিমে নবদ্বীপের দিকে ইঞ্জিন ছুটল। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত শনিবার সকালের দিকে নতুন রেল প্যানেলবাহী একটি ওয়াগন কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটার উদ্দেশ্যে সফর করে। এদিকে, রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ১২ কিমি পথ দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় সেখানকার রেললাইন খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই, সম্পূর্ণ নতুন রেল প্যানেল বসতে চলেছে আমঘাটা পর্যন্ত। পাশাপাশি, আমঘাটা পূর্ণাঙ্গ ব্লক স্টেশন হিসেবে কাজ করবে বলেও জানা গিয়েছে।
মূলত, দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর ওই অসমাপ্ত রেলপথে সংস্কার কাজ সম্প্রতি জোরকদমে শুরু হয়েছে। এদিকে, ওই রেললাইনের একটি পাশে রয়েছে নবদ্বীপ ঘাট-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক। পাশাপাশি, রেললাইনের অপর পাশে একটি ঢালাই রাস্তার কাজও শুরু হয়েছে। একটা সময়ে নবদ্বীপ ঘাট থেকে কৃষ্ণনগর হয়ে সরাসরি শান্তিপুর পর্যন্ত মোট ২৯ কিমি ন্যারো গেজ রেলপথে ছোট রেল চলত। তবে, ২০১০ সালে পূর্ব রেলের নবদ্বীপ ঘাট-শান্তিপুর ন্যারো গেজ লাইনকে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী, ব্রড গেজে রূপান্তরের কাজ শুরু হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, ওই বছরই ১৭ জানুয়ারি ওই পথে শেষ বারের মতো সফর করেছিল ছোট রেল। এদিকে, মোট ২৯ কিমি ন্যারো গেজ লাইন প্রথম ধাপে শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর জংশন পর্যন্ত ব্রড গেজ হয়। এর পরে শুরু হয় কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১২ কিমি রেলপথের গেজ পরিবর্তনের কাজ। যদিও, ওই কাজে প্রায় আট কিমি কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলেও এরপরই হতে হয় সমস্যার সম্মুখীন। মূলত, জমিজটের কারণে আমঘাটা থেকে নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত অবশিষ্ট চার কিলোমিটার অংশে এখনও রেললাইন পাতা যায়নি।
আরও পড়ুন: ফের কড়া অ্যাকশন RBI-এর! এই ব্যাঙ্কগুলিকে করা হল বিপুল অঙ্কের জরিমানা, আপনার অ্যাকাউন্ট নেই তো?
২০১৮ সালে এই কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগও দেখা যায়নি জমিজট কাটানোর লক্ষ্যে। তবে, কিছুদিন আগেই কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটা পর্যন্ত যতটুকু রেলপথ সম্পূর্ণ হয়েছে, সেই পর্যন্ত ট্রেন চালানোর উদ্যোগের কথা শোনা গিয়েছিল। তারপরেই আগাছা সাফ সহ রেললাইন সংস্কারের পাশাপাশি আমঘাটা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার জানিয়েছেন, “আমঘাটা পর্যন্ত রেলপথের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং স্টেশনও তৈরি। বর্তমানে কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটা পর্যন্ত রেল চলবে। আর সেই কারণেই গত শনিবার ইঞ্জিন চলেছে।” এছাড়াও, তিনি দাবি করেন যে, “এই প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করলেও এখন রাজ্য সরকার চাইছে না এখানে ট্রেন চলুক। তবে, স্থানীয় মানুষ ভীষণ ভাবে চাইছেন যে ট্রেন চালু হোক। তাই, এখানকার বাসিন্দাদের জন্য ২০২৪-এর জানুয়ারিতে ভারতীয় রেল এই রেলপথকে উপহার দেবে।”