বাংলাহান্ট ডেস্ক : শিক্ষা দপ্তরে কাজের নাম করে মন্ত্রীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল তাঁকে। ফাইফরমাশ খাটানোর পাশাপাশি তাঁকে দিয়ে করানো হত কুকুরের মল পরিষ্কার করার কাজও। সেই সঙ্গে পান থেকে চুন খসলেই চলত অশ্রাব্য গালিগালাজ। কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে এহেন মারাত্মক অভিযোগই এনেছিলেন ডেববার আদিবাসী তরুনী সবিতা লায়েক। এবার সেই অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য মন্ত্রী পত্নীর বিরুদ্ধে তাঁর উপর চাপ দেওয়ার অভিযোগ আনলেন তরুণী। স্বভাবতই এবারও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মন্ত্রী এবং মন্ত্রী জায়া।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা গ্রামের বাসিন্দা সবিতা লায়েক শিক্ষাগত যোগ্যতায় স্নাতক। অত্যন্ত কষ্ট করেই পড়াশোনা শিখেছেন দরিদ্র আদিবাসী পরিবারের মেয়ে সবিতা। গতবছর বিধানসভা ভোটের পরই কারিগরি শিক্ষা দপ্তরে তাঁর একটি অস্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করেন হুমায়ুন কবীর। কিন্তু অভিযোগ ওঠে সেই চাকরির নাম করে মন্ত্রীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করানো হত ওই তরুণীকে দিয়ে।
ওই তরুণী আগেই জানিয়েছিলেন, ‘ঘর ঝাঁট-মোছা, কাপড় কাচা, বাসন মাজা, তিন-চারটে কুকুরের মল পরিষ্কার সবই করানো হত আমাকে দিয়ে। কাজে সামান্য ভুল হলেই মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী নিচু জাত বলে গালিগালাজ করতেন। কোনও রকম নিয়োগ পত্রও দেওয়া হয়নি আমাকে দপ্তরের তরফে।’ এরপরই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সবিতা। কিন্তু এবার ওই তরুণীর দাবি, ওই অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য তাঁর উপর চাপ দিচ্ছেন হুমায়ুন পত্নী অনিন্দিতা দাস কবীর এবং স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা। একটি ছাপানো বয়ানে তাঁকে জোর করে সই করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ এনেছেন তিনি।
সবিতা জানান চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা বলে ৬ মে সকালে তাঁর বাড়িতে পুলিশ আসে। পুলিশের গাড়িতেই তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে এক তৃণমূল নেতার গাড়িতে তাঁকে ও তাঁর অভিভাবকদের নিয়ে যাওয়া হয় কোলাঘাটের হোটেলে। সঙ্গে কয়েক জন নেতা ও সাধারণ পোশাকে এক পুলিশকর্মীও গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ওখানেই হুমায়ুন কবীরের স্ত্রী ও দলীয় নেতা অলোক আচার্য, প্রদীপ কর, আবু বক্স, শীর্ষেন্দু অধিকারী মিথ্যা ছাপানো বয়ানে সই করার জন্য চাপ দেন তাঁকে। এরপর থেকে লক আপে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকির কথাই জানিয়েছেন তরুণী। যদিও সম্পুর্ণ অভিযোগই অস্বীকার করেছেন হুমায়ুন কবীর। তাঁর সাফ দাবি, ‘আমার এক মিনিট লাগবে প্রমাণ করতে যে সব অভিযোগ মিথ্যে।’ ঘটনায় পুলিশ জড়িত থাকতে পারে না বলে দাবি করে ঘটনার তদন্ত করার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।