বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি তৃণমূলের (Trinamool Congress) কর্মী সভা থেকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আসন্ন নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার পাশাপাশি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ভোটার লিস্টে থাকা ‘ভুতুড়ে ভোটার’ চিহ্নিতকরণের প্রসঙ্গেও। তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই জোরকদমে চলছে ভুতুড়ে ভোটার চিহ্নিতকরণের কাজ। ইতিমধ্যেই ভোটার তালিকা হাতে নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে উদয়ন গুহরা। এবার এই ভুতুড়ে ভোটার চিহ্নিতকরণের কাজ কতদূর এগলো? তা খতিয়ে দেখতেই এবার বৈঠকে বসতে চলেছে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কমিটি। জানা যাচ্ছে আগামী ৬ মার্চ তৃণমূল ভবনে এই বৈঠক বসবে।
‘ভূতুড়ে’ ভোটার ধরতে বড় পদক্ষেপ তৃণমূলের (Trinamool Congress)
তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন, ‘জেলায় জেলায় ভুয়ো ভোটার ধরতে অভিযান চলবে।’ সেই কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে খোঁজখবর নিতেই আগামী বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবেন ৩৬ সদস্যের কোর কমিটির সদস্যরা এবং রাজ্যের প্রত্যেক জেলার সভাপতি এবং চেয়ারম্যানরা। সকলের নজর এখন ওই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়, সেদিকেই।
‘ভূতুড়ে’ ভোটার ইস্যুতে খুব স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ভোটার তালিকার বুথভিত্তিক, ঠিকানাভিত্তিক স্ক্রুটিনি চলবে। তাই কমিশন যে সাফাই-ই দিক না কেন, এবং সংবাদমাধ্যম যে কথাই লিখুক না কেন, তাতে সন্তুষ্ট হওয়া চলবে না। মহারাষ্ট্র,এবং দিল্লির নির্বাচনে যে চক্রান্ত হয়েছে বাংলার মাটিতে তা চলবে না। সব ষড়যন্ত্র বাংলা ভেঙে চুরমার করে দেবে। বিজেপির চক্রান্ত রুখতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্ক্রুটিনি করতে হবে। জেলায় জেলায় ভুয়ো ভোটার ধরতে অভিযান চলবে।’
কথা মতোই ‘ভূতুড়ে’ ভোটার চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করতে তড়িঘড়ি কমিটিও গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রয়েছেন দলের (Trinamool Congress) একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী ১০ দিনের ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখে ‘ভূতুড়ে’ ভোটার চিহ্নিতকরণের সময় বেঁধে দিয়েছেন মমতা।
আরও পড়ুন: ভয় ধরাচ্ছে বিপজ্জনক বাড়ি! বিধি সরল হলেও কাটছে না জট
প্রসঙ্গত এই নকল ভোটার ইস্যুতে তৃণমূল নেত্রী কড়া হুঁশিয়ারি দিতেই নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই রবিবার বিবৃতি দিয়ে বিরাট দাবি করেছে তাঁরা। কমিশনের কথায় একই এপিক নম্বর থাকা মানেই ভুয়ো ভোটার নয়। তাঁদের দাবি, দুই বা তার বেশি ভোটারের একই এপিক নম্বর থাকলেই তাঁদের ভুয়ো ভোটার বলা যাবে না। অন্যান্য একাধিক শর্তের মাধ্যমে এই দুই ভোটারদের আলাদা করা যেতে পারে।
কমিশন এই বিবৃতি দিতেই তৃণমূলের (Trinamool Congress) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘ভূতুড়ে’ ভোটার বাছতে স্ক্রুটিনির কাজ অব্যাহত থাকবে। সেইসাথে তিনি দাবি করেন কমিশন এই বিবৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা অভিযোগ সত্যি।’ প্রসঙ্গত ভুয়ো ভোটার তালিকার পাশাপাশি মমতা এদিন প্রশ্ন তুলেছিলেন নব নিযুক্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের নিরপেক্ষতা নিয়েও। নির্বাচন কমিশনের সকলেই ‘বিজেপির লোক’ বলে দাবি করছিলেন তিনি। তারপর মমতার বক্তব্যের প্রতিবাদে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠিও লেখেন তিনি।