বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিপিএমের টালিগঞ্জ-২ এরিয়া কমিটির সম্মেলনে হাতাহাতির ছবি ইতিমধ্যেই অনেকে দেখেছেন। যা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে। তৃণমূল কাউন্সিলর তথা মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী (Arup Chakraborty) নিজের সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিও শেয়ার করেছিলেন। কোথা থেকে পেলেন সেই ভিডিও? এবার বাংলা হান্ট সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি।
সম্মেলনের ছবি কোথা থেকে পেলেন? তাহলে কি সিপিএমের (CPM) লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে? প্রশ্ন ছুঁড়তেই অরূপ বলেন, ‘দেখুন আমি অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি। এই ওয়ার্ডের আমি পৌর প্রতিনিধি। এই ওয়ার্ডের সমস্ত মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব আমার। সে সিপিএম হোক, বিজেপি হোক, কংগ্রেস হোক, তৃণমূল হোক- সকলকে। তার বাইরে আমি দলের মুখপাত্র’।
অরূপ (Arup Chakraborty) বলেন, ‘যে বিরোধী দল বড় বড় করে রেজিমেন্টেশনের বড়াই করত, যারা গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার ডায়লগ দিত, সারা জীবন মানুষকে বলেছে ‘পার্টি উইথ আ ডিফারেন্স’, তাদের আসল বেআব্রু, কঙ্কালসার চেহারাটা, সেটা আজ মানুষের সামনে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া প্রয়োজন ছিল। একটা দল কেন শূন্য হয় সেটা বোঝার জন্য কোনও রাজনৈতিক পণ্ডিত হতে হয় না’।
আরও পড়ুনঃ শাহরুখ-সলমন অতীত! এবার নিশানায় মিঠুন! ১০-১৫ দিনের সময় বেঁধে দিলেন পাকিস্তানি গ্যাংস্টার
তৃণমূল (Trinamool Congress) কাউন্সিলর জানান, তাঁর ওয়ার্ডের সিপিএমের যুব নেতার বিরুদ্ধে দলেরই মহিলা সহকর্মীকে ধর্ষণ ও সেই ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ উঠেছে। বিগত ৩-৪ বছরের পুরনো অভিযোগ এটি। এই বিষয়ে পার্টি জানতো বলে দাবি করেন অরূপ। দলের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল, তবে তারা সেই অভিযোগকে সামনে আনতে দেয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
অরূপ (Arup Chakraborty) বলেন, আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে নেতাজীনগরে নারী সুরক্ষার আন্দোলনের নেতৃত্বের মুখ ছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। তৃণমূল নেতার কথায়, ‘এই জন্যই পার্টিটা সার্কাসে পরিণত হয়েছে। তাঁকে (অভিযুক্ত ব্যক্তি) মুখ করে যদি নারী সুরক্ষার আন্দোলন করে, তাহলে এই দলের এই পরিণতি হওয়ার কথা ছিল’। অরূপ বলেন, তিনি এলাকার জনপ্রতিনিধি। তাঁর কাছে সবাই পাঠায়। সব দলের লোকেদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা পাঠিয়েছেন।
তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, তাঁর ‘সূত্র’ তাঁর ওয়ার্ডের মানুষ। সেই মানুষের মধ্যে সিপিএমের বামপন্থী মানুষও থাকতে পারে বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে সিপিএমের সম্মেলনে হাতাহাতির এই ঘটনায় তৃণমূল মুখপাত্র তন্ময় ঘোষের সঙ্গে বাংলা হান্টের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি এর সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরে বলেন, ‘মঞ্চে হাতাহাতি আমার কাছে খুবই অবশ্যম্ভাবী একটা বিষয়। কারণ বাইরে থেকে দেখে আমার মনে হয়েছে, তাদের বিভিন্ন নেতৃত্ব বিভিন্ন ভাবে মানসিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত’।
তৃণমূল নেতা বলেন সিপিএমের একদল ভাবে, সমাজমাধ্যম দিয়েই আবার ক্ষমতায় আসা সম্ভব। আরেকদল ভাবে একটু রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে তা সম্ভব। অন্য আরেকটি দল ভাবে ধর্মীয় কোনও শক্তির সঙ্গে যোগ দিলে হয়তো ক্ষমতায় আসা সম্ভব। এমন নানান ভাবনা নিয়ে তারা ঘুরে বেড়ান। তৃণমূল নেতা বলেন, আসলে তারা কিছু করছেন না, তারা শুধু চাইছেন তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে চলে যাক। সেখান থেকে কোথাও গিয়ে হয়তো তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন, তাদের নেতৃত্ব হয়তো দিশা দেখাতে পারছেন না, সেই থেকে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।