বাংলা হান্ট ডেস্ক : তুলকালাম এগরা। বিস্ফোরণ কাণ্ডে বাজি কারখানার মালিক ভানু বাগের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করল পুলিস। মর্মান্তিক এই বিস্ফোরণে (Egra blast) ইতিমধ্যেই ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গোটা গ্রাম। তাঁদের অভিযোগ, ভানু বাগের বাড়িতে বারুদের স্তূপ থাকা সত্ত্বেও পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ ভয়ংকর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এগরার খাদিকুল গ্রাম (Egra cracker unit burst)। কানফাটানো শব্দে গোটা গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। জানা যায় বিস্ফোরণ ঘটেছে ভানু বাগের বাজি কারখানায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন এই তৃণমূল সদস্যের বেআইনি এই বাজি কারখানায় আগেও বিস্ফোরণ হয়েছিল। এক সময় গ্রেফতারও করা হয় ভানুকে। মঙ্গলবার আবারও বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরেই বেপাত্তা হয়ে যায় ভানু।
বিস্ফোরণের পরেই এই ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং গুরুতর আহতদের পরিবারপিছু ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, এটি একটি বেআইনি বাজি কারখানা যার মালিক কৃষ্ণপদ বাগকে ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর গ্রেফতার করেছিল পুলিস। তারপর আদালত থেকে জামিন পান তিনি। বিজেপি কৃষ্ণপদ ওরফে ভানুকে তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করলে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, তৃণমূলের লোক হলে গতবার কালীপুজোর সময় রাজ্য পুলিস কেন গ্রেফতার করল ওঁকে?
জানা গেছে ১৯৯৫ সালে ভানু বাগের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচজনের। পরে ফের বিস্ফোরণ হয়। মৃত্যু হয় ভানুর ভাই-সহ তিনজনের। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাজির ব্যবসা করেন ভানু। তাঁর তৈরি বাজির চাহিদাও ছিল মারাত্নক। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকেই শাসকদলের সঙ্গে ভানুর সখ্যতা বাড়ে।
পরে গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য হন তিনি। এলাকার বাসিন্দারা দাবি করেন, মঙ্গলবার বিস্ফোরণের সময়ও বাড়িতেই ছিল ভানু। সে সময় কারখানায় ১৮ থেকে ২০ জন কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা। বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থল থেকে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যায় ভানু। ঘর লাগোয়া কারখানায় তখন আর্তনাদ আর বাঁচার আর্তি। সে সব কান না দিয়েই গ্রাম ছেড়ে পালান তিনি।