বাংলাহান্ট ডেস্ক : দিল্লির মাছ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে নাম জড়াল এক তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার। এই ঘটনায় মঙ্গলবার তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে শাসন থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত তিনজনের নাম সাদ্দাম মণ্ডল, সজ্জন আলম এবং জামালউদ্দিন মণ্ডল। এঁদের মধ্যে সাদ্দাম মণ্ডল স্বরূপনগরের চারঘাট অঞ্চল তৃণমূলের (Trinamool Congress) সভাপতি। আর সজ্জন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী বলে জানা যাচ্ছে। এই তিন জনের বিরুদ্ধে উঠেছে অপহরণের অভিযোগ।
ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার বিরুদ্ধে
যেমনটা জানা গিয়েছে, রবিবার দিল্লি থেকে এসে দমদম বিমানবন্দর থেকে একটি ক্যাব নিয়ে বসিরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী নাজিম চৌহান। মাঝ রাস্তায় ক্যাব থেকে নামিয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে এক কোটি টাকা মুক্তিপণও দাবি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যাব চালকের তৎপরতায় শাসন থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। পুলিশ তদন্তে নেমে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কিনারা করে ফেলে অপহরণ রহস্যের। তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করা হয় মাছ ব্যবসায়ীকেও।
অপহরণের কারণ কী: কেন অপহরণ করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে? কীভাবেই বা অপহরণের প্ল্যান তৈরি হয়? তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বাদুড়িয়া থানা এলাকায় একটি হ্যাচারি রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর, যেখানে তাঁর অংশীদার ছিলেন জামালউদ্দিন মণ্ডল (Trinamool Congress)। বছর খানেক আগে ওই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই তিনি দাবি করেন, ব্যবসায়ীর কাছে তাঁর অংশীদারির টাকা পাওনা রয়েছে। পালটা ব্যবসায়ী দাবি করেন, তিনি নিজেই টাকা পান জামালউদ্দিনের থেকে। শেষমেষ এক তৃতীয় ব্যক্তির মধ্যস্থতায় হ্যাচারি বিক্রির পর হিসেব করে সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই কারণেই কলকাতায় এসেছিলেন দিল্লির ব্যবসায়ী।
আরো পড়ুন : আজই জানা যাবে মাধ্যমিকের রিভিউ-স্ক্রুটিনির ফল, কীভাবে দেখবেন অনলাইনে? জানিয়ে দিল পর্ষদ
কীভাবে করা হয় পরিকল্পনা: জানা গিয়েছে, রবিবার বিমানবন্দরে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন জামালউদ্দিন। ব্যবসায়ী আসতে তাঁকে নিয়ে ক্যাব রওনা হয় বসিরহাটের উদ্দেশে। মাঝপথে শাসনের সন্ডালিয়া রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি থামিয়ে হালকা হতে নামেন জামালউদ্দিন। তখনই পেছন থেকে আসা একটি গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ওই গাড়িতে তোলে। সঙ্গে তোলা হয় জামালকেও, যাতে কোনো রকম সন্দেহ না হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, বসিরহাটের এক নির্জন জায়গায় আটকে রাখা হয়েছিল ব্যবসায়ীকে।
আরো পড়ুন : আম জনতার স্বস্তি! বিল এনে বেসরকারি হাসপাতালের খরচে লাগাম রাজ্য সরকারের
ব্যবসায়ীর বাড়িতে ফোন করে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারপরেই মোবাইল নম্বরের লোকেশন ট্র্যাক করেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তারপরেই নাকি ব্যবসায়ীকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালায় অপহরণকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, বসিরহাটের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে। মঙ্গলবার বারাসত আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ২০ শে জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তৃণমূলের (Trinamool Congress) নাম জড়ানোয় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে দল। স্বরূপনগরের তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডল এ বিষয়ে বলেন, ধৃতরা তৃণমূল করলেও দল এই ঘটনাকে প্রশ্রয় দেবে না।