বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে দশ দফা দাবি সামনে রেখে আমরণ অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ভর্তি করাতে হয়েছে হাসপাতালে। তবে অনশন থামেনি। এই আবহে এবার পাল্টা ১৩ দফা দাবি নিয়ে হাজির হলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি বলছেন, এই দাবিগুলিও বিবেচিত হোক।
কী কী দাবিতে সরব কুণাল (Kunal Ghosh)?
বুধবার নিজের সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা। সেখানে রীতিমতো পয়েন্ট করে নিজের দশ দফা দাবি তুলে ধরেছেন তিনি। পোস্টের শুরুতেই লেখা, ‘এই ১৩ দফা দাবিও বিবেচিত হোক। ডাক্তাররা কী বলেন?’
‘১) সব হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হোক। সঙ্গে তাঁদের ডিউটির সময় অনুযায়ী উপস্থিতি, রোগী দেখাটাও সুনিশ্চিত হোক।
২) সরকারি হাসপাতালের কাজ ফেলে, সুবিধেমত ডিউটি বদলে বাকি সময় প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করা চলবে না।
৩) প্রেসক্রিপশনে একই গুণমানের কমদামী ওষুধের বদলে ওষুধ কোম্পানির প্রভাবে দামি ওষুধ লেখা চলবে না। জেনেরিক টার্মে ওষুধ লিখুন, কোম্পানির ব্র্যান্ড নয়।
৪) ওষুধ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম (পেস মেকার সহ) কোম্পানির স্পনসর শিপে অনুষ্ঠান, দেশবিদেশে ভ্রমণ চলবে না। ওঁরা সমাজসেবা করেন না। কমিশন, কাটমানির অভিযোগের বন্ধ/ সুরাহা করতে হবে।
৫) কথায় কথায় বিভিন্ন পরীক্ষার নামে নির্দিষ্ট ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে কেউ যেন কমিশন না নেন।
৬) ডাক্তারদের ফি যাতে মানুষের নাগালে থাকে, তার কাঠামো চাই। প্রত্যেককে রশিদ দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ সুকান্ত জমানায় ইতি! বঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি কে? ৫ নাম সামনে আসতেই শোরগোল
৭) হয় সরকারি, নইলে বেসরকারি বেছে নিন। দু’টো একসঙ্গে কোনও নিয়ম দেখিয়ে চলবে না।
৮) সাধারণ মানুষের করের টাকার ভর্তুকিতে যাঁরা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়বেন, তাঁদের সরকারি কাজেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোটি টাকা দিয়ে বেসরকারিতে পড়াদের কথা আলাদা।
৯) স্পেশ্যালিস্ট, সিনিয়রদের ঠিক মতো ডিউটি করতে হবে। লবি করে কলকাতা পোস্টিং বা জেলায় গেলেও কৌশলী রস্টারে তিন/চার দিন কলকাতায় এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চলবে না। জেলার হাসপাতালে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।
১০) শূন্যপদ পূরণ হোক। পরিকাঠামো বাড়ুক। কিন্তু নিজেদের কর্মক্ষেত্রকে রোগীবন্ধু রাখার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি ডাক্তারদেরও নিতে হবে। কারণ সরকারি কাঠামোতে দুর্বলতা দেখিয়ে রোগীকে বেসরকারিতে যেতে বাধ্য করা/ টেনে দেওয়ার অভিযোগ আছে, বন্ধ করতে হবে এসব।
১১) বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ভর্তিতে বিপুল টাকা, পড়তে টাকা, সেমিস্টারে ফেল করিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাশ- এইসব অভিযোগবন্ধনীতে কিছু ডাক্তারও আছেন। এসবে স্বচ্ছতা ও তদন্ত দরকার।
১২) বিভিন্ন সরকারি হাসপাআলে কিছু কোটা দীর্ঘকাল আছে। মুখ্যমন্ত্রীর কোটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ করেছেন। কিন্তু হাসপাতালের কোটাগুলি নিয়ে বহু অনিয়মের অভিযোগ, বহু ডাক্তার জানেন, সেগুলি বন্ধ হোক বা স্বচ্ছতা আনা হোক।
১৩) চিকিৎসার গাফিলতিতে নির্দিষ্ট এফআইআর বাধ্যতামূলক হোক’।
এদিন নিজের সমাজমাধ্যমে এমনই ১৩টি দাবি তুলে ধরেছেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। অনেকেই তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘প্রত্যেকটি দাবি ন্যায়সঙ্গত এবং বাংলার নিম্নবিত্ত/ মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে হিতকর। ধন্যবাদ জানাই কুণালবাবু আপনাকে, এই দাবিগুলি তুলে ধরার জন্য’। কারোর আবার মত, ‘দুর্দান্ত প্রস্তাব। ডাক্তারবাবুদের উচিত সহানুভূতিশীল হয়ে প্রত্যেকটি দাবি মেনে নেওয়া’।