বাংলা হান্ট ডেস্ক: বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election)। শাসক- বিরোধী ভোট প্রস্তুতিতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দলগু। ওদিকে গত কিছুদিন ধরে তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ ইস্যুতে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। সম্প্রতি এই বিতর্কে মুখ খুলে ঝাঁজালো মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই থেকে আরও চড়েছে বিতর্কের পারদ। আর এবার শোনা যাচ্ছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে কেবলমাত্র ডায়মন্ড হারবারেই (Diamond Harbour Constituency) সীমাবদ্ধ রাখতে চান অভিষেক (Abhishek Banerjee)।
দলের অন্দরে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল। অভিমান? নাকি চরম অসন্তোষ? কেন দলে থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন অভিষেক? উঠছে প্রশ্ন। সদ্য চিকিৎসা সেরে ফিরেছেন অভিষেক। শনিবার অভিষেকের কালীঘাটের অফিসে বৈঠকে তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন তার ঘনিষ্ঠ নেতারা। সূত্রের খবর লোকসভার আগে তাকে ‘সক্রিয়’ হওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন তারা। তবে কোনও ইতিবাচক জবাব আসেনি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, লোকসভা ভোটে তিনি শুধু ডায়মন্ড হারবারেই নিজেকে সক্রিয় রাখতে চান। দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব বা নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে থাকতে চান না তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড।
প্রসঙ্গত, শনিবার অভিষেকের কালীঘাটের অফিসে তার সঙ্গে দেখা করতে যান কুণাল ঘোষ, পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামী, ব্রাত্য বসু ও তাপস রায়রা। সেখানেই নাকি নেতা জানিয়েছেন লোকসভা ভোটে কেবল ডায়মন্ড হারবারেই থাকবেন তিনি। দল জনসভা দিলে অংশ নেবেন ঠিকই তবে যদি সেদিন নিজের কেন্দ্রে পূর্বনির্ধারিত কোনও কর্মসূচি না থাকে, তাহলেই।
আরও পড়ুন: নতুন বছরেই আসছে সুখবর! ফের ৪% DA বাড়তে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের, এল বিরাট আপডেট
সূত্রের খবর, তার নেতৃত্বে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা, আবাস যোজনা-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া আন্দোলনকে যে মাত্রায় পৌঁছেছিল, সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে হঠাৎ তাকে থামিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তিনি। প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসে বাংলার ধর্ণা দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে আলোড়ন ফেলে দেন অভিষেক। দুদিন রাজধানীর মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন। ওদিকে রাজ্যে ফিরেও সেই আন্দোলনের তীব্রতা কমেনি। রাজ্যপাল বোস যত ক্ষণ না পর্যন্ত তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত রাজভবনের সামনে ধর্নায় ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
বাংলার মানুষের হকের টাকা ছিনিয়ে আনতে গোটা পুজো তিনি রাস্তায় কাটাবেন বলেও ঘোষণা করে দেন। তবে সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের বর্ষীয়ান নেতাদের অনুরোধে সেই ধর্না তুলতে বাধ্য হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এক মাসের মধ্যে কেন্দ্র দাবি না মানলে নভেম্বরে ফের মমতার নেতৃত্বে দিল্লি অভিযানের ডাক দেন অভিষেক। তবে কোথায় কি, শেষমেষ আর আন্দোলন হয়নি। তবে গত ২০ ডিসেম্বরের মমতার নেতৃত্বে তৃণমূলের সাংসদদের এক প্রতিনিধি দল এই বকেয়া ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অভিষেকও ছিলেন সেই দলে। তবে তাকে কোনও কথা বলতে দেওয়া হয়নি বৈঠকে।
জানা যাচ্ছে, অভিষেক যে মাত্রায় নিজের আন্দোলন দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন সেই জায়গা থেকে তাকে সরিয়ে অনায় ক্ষুব্ধ অভিষেক। লোকসভার আগে তিনি যেভাবে যা প্ল্যান করেছিলেন তার কিছুই করতে দেওয়া বা করা হয়নি বলে দল সূত্রে খবর। ওদিকে গতকাল অভিষেক সরকারি বেশ কিছু আমলার ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। সবমিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূলে ছন্দপতন? এমনই প্রশ্ন উঠছে একাধিক মহলে।