বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘বাংলায় দুর্গাপুজো দেখে বিরোধীদের জ্বালা ধরে গেছে। মানুষকে ভুল বুঝিয়ে চলেছে ওরা’, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) অনুদান প্রসঙ্গে বিরোধীদের ঠিক এই ভাষাতেই আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। একইসঙ্গে, পুজোয় অনুদান দেওয়ায় অন্যায়ের কোন বিষয় নেই বলেই মত প্রকাশ করেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে ‘দুর্গাপুজোর অনুদান’ প্রসঙ্গ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতি। প্রতি বছর দুর্গাপুজোয় বাংলার পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হলেও এ বছর বঙ্গের মোট ৪৩ হাজার ক্লাবকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বিদ্যুতের বিলেও বেশ খানিকটা ছাড়ের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের এহেন ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। সরকারি কর্মচারীদের ডিএ থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের কাছে টাকা না থাকলেও পুজো অনুদানে বিপুল পরিমাণ টাকা কেন দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিতে থাকে বিরোধী দলগুলি। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টে এই প্রসঙ্গে একটি জনস্বার্থ মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হয়।
এদিন সম্পূর্ণ ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দুর্গাপুজো হলো সব ধরনের মানুষের উৎসব। এটি সব স্তরের মানুষকে একত্রিত করে। ক্লাবগুলি সুন্দর করে উৎসবের আয়োজন করে। তবে অনেকেই আবার টাকার অভাবে ভালো করে পরিচালনা করতে সক্ষম হয় না। তাদের যদি সাহায্য করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় না এর মধ্যে কোনো অন্যায় রয়েছে।”
এদিন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে একটি শোভাযাত্রায় যোগদান করেন তৃণমূল সাংসদ। শ্রীরামপুরের মাহেশ থেকে গান্ধী ময়দান পর্যন্ত ওই শোভাযাত্রায় উপস্থিত হয়ে কল্যাণবাবু বলেন, “দুর্গাপুজো নিয়ে যে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে, তা নিয়ে বিশেষ কিছু বলবো না। কারণ, তা আদালতের বিচারাধীন বিষয়। তবে বিরোধী দলগুলি এটিকে নিয়ে রাজনীতি করে চলেছে। একটি বিরোধী দল অতীতে বলতো, আমাদের বাংলায় নাকি দুর্গাপুজো হয় না আর এখন দুর্গাপুজো দেখে ওদের জ্বালা ধরে গিয়েছে। মানুষকে ক্রমশ ভুল বুঝিয়ে চলেছে ওরা। আর একটা বিরোধী দল পুজো আসলেই লাল সামিয়ানা টাঙিয়ে মার্কসের বই বিক্রি শুরু করে দেয়।”
প্রসঙ্গত, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও মা দুর্গার বড় ভক্ত হিসেবেই পরিচিত। গত বছর দুর্গাপুজোর সময় হাতজোড় করে প্রার্থনা, আরতি করার পাশাপাশি অঝোরে কাঁদতেও দেখা যায় তৃণমূল সাংসদকে। আর সেই কল্যাণবাবু এবার জানিয়ে দিলেন, “পুজোয় অনুদান দেওয়ায় কোন রকম অন্যায় নেই।”