বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূলের (Trinamool Congress) অন্দরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব ছিল আগেই। যা সম্প্রতি নতুন করে মাথা ছাড়া দিতে শুরু করেছে। সেই সাথে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ। যা দেখে বিরোধীপক্ষ বলতে শুরু করেছে তৃণমূলের ভাঙন এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মধ্যে নাকি ক্রমশ প্রকট হচ্ছে দুই শিবির।
অভিষেকের (Abhishek Banerjee) প্রশংসা করে বহিস্কৃত তৃণমূলের দুই শিক্ষক নেতা
ইতিপূর্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) দলের অন্দরেই কোণঠাসা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যদিও তার জন্য দলের তরফে শোকজ করা হয়েছিল তাকে। আর এবার জানা যাচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে সুর চরানোর জন্য তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতাকে বহিষ্কার করে দিয়েছে দল। তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ।
বলা হচ্ছে তাদের মন্তব্যের জন্য নাকি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এদিন দুই শিক্ষক নেতাকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন দলের শিক্ষা সেলের সভাপতি তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। কিন্তু বহিষ্কৃত হওয়ার পর নিজেদের অপরাধটা কি সেটাই বুঝতে পারছেন বহিস্কৃত নেতারা। তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার সহ-সভাপতি পদে ছিলেন মণিশঙ্কর মন্ডল। অন্যদিকে তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি পদে ছিলেন প্রীতম হালদার।
এদিন একটি বিবৃতি দিয়ে দলের সমস্ত পদ থেকে তাদের বহিষ্কার করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। যদিও তারা এখনও হাতে কোনো অফিসিয়াল নোটিস পাননি বলেই দাবি করেছন মণিশঙ্কর মন্ডল। প্রসঙ্গত ২০২৪ -এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন মণিশঙ্কর। একই সাথে তৃণমূল নেতাকে ‘গেম চেঞ্জার দাদা’ বলেও পোস্টার বের করেছিলেন মণিশঙ্কর। কিন্তু ওই পোস্টার বের করার পর নাকি জুটেছিল গালাগালি। ব্রাত্য বসু নাকি তাকে ফোন করে হুমকি এবং গালাগালি দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন মণিশঙ্কর।
আরও পড়ুন: ঢেলে সাজাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, বিশেষ নজর স্বাস্থ্যে! বছর শেষেই নবান্নে বিরাট রদবদল
তাই সেই ক্ষোভ থেকেই ওই পদ থেকে তাকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন মণিশঙ্কর। এমনকি তার দাবি তাকে বহিষ্কার করার এই সিদ্ধান্ত নাকি তৃণমূলের নয় এই সিদ্ধান্ত ব্রাত্য বসু নিয়েছেন। একই সাথে তিনি জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বের করে দিলে তবেই তিনি মেনে নেবেন। সেই সাথে তিনি জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সাওয়াল করা যদি দল বিরোধী কাজ হয়ে থাকে তাহলে তিনি এই কাজ আরও করবেন।
তার মতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হয়ে মুখ খোলা অপরাধ নয়। দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার খবর মিলতেই এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আপলোড করে একটি ইঙ্গিত পূর্ণ পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘পছন্দ নয় ভন্ড ও ফেক, তাই নেতা বেছেছি অভিষেক। অভিষেক ব্যানার্জি জিন্দাবাদ’।
তারপরেই প্রশ্ন উঠছে এখানে ‘ভন্ড ও ফেক’ বলে আসলে কাকে বোঝাতে চেয়েছেন দলের শিক্ষক নেতা? প্রসঙ্গত আরজিকর কান্ডের পর জহর সরকার সংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সেই সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে মন্ত্রিসভায় আনার জন্য প্রকাশ্যে সরব হয়েছিলেন মণিশঙ্কর। অন্যদিকে মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি প্রীতম হালদারের দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সমর্থনে মুখ খোলার জন্য ব্রাত্য বসু গালিগালাজ করেছেন। এমনকি তাকে নাকি সঠিকভাবে কাজ করতে দেওয়াও হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।