বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না তৃণমূলের। প্রথম দুটি টার্মে শাসক দল যেমন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়েছিল, এবারও বাদ পড়ল না। চাল, ত্রাণ, রেশন, নিয়োগ, ১০০ দিনের টাকা সব দুর্নীতিতেই উঠে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের নাম। যদিও, দলের দাবি তাঁরা কোনও দুর্নীতিতে যুক্ত নেই, সব বিরোধীদের অপপ্রচার।
তবে, এবারে দুর্নীতির অভিযোগ আরও বেশি উঠছে। সরকার গড়ার ১ বছরের মধ্যে ১২টিরও বেশি মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে, খুন, ভোট পরবর্তী হিংসার মামলাও রয়েছে। তবে, সবথেকে বেশি যেই মামলাটি এখন প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটি হল নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। হাইকোর্টে বহু আগেই এই মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এমনকি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তদন্তকারীদের জেরার মুখোমুখি হওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আদালত এও বলেছিল যে, ছুতো দেখিয়ে SSKM-এ ভর্তি হওয়া যাবে না।
আর সেই দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে শুক্রবার থেকে শনিবার ২৪ ঘণ্টারও বেশি জেরা করা হয় পার্থবাবুকে। আর এই জেরার মধ্যেই পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নগদ ২১ কোটি টাকা, ৫০ লক্ষ টাকার গহনা ও ২০টি মোবাইল। এরপরই ইডি তৎপর হয়ে পার্থবাবু ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতাকে আটক করে।
এই ঘটনার পরই দল থেকে তাঁকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে তাঁর দল তৃণমূল। গতকালই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই বিশ কোটি টাকা উদ্ধার নিয়ে বলেছিলেন যে, এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। আর এবার দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাওয়াই আগে থেকেই কেন কার্যকর করা হল না ?
দলের তরফ থেকে এই অভিযোগ করা হচ্ছে যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাওয়াই কার্যকর যাতে না হয়, সেই কারণে পার্থবাবু এবং আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতা প্রভাব খাটিয়ে দলের দখলদারি নিতে চেয়েছিলেন।
কী ছিল সেই দাওয়াই? আসলে একুশের নির্বাচনের পরপরই অভিষেক দলীয় নেতাদের নিয়ে অনেক তথ্য পান। আর এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, পুরনো কিছু মুখ সরিয়ে নতুনদের আনা হবে। কিন্তু পার্থবাবু সেই সময় প্রভাব খাটিয়ে অভিষেকের এই নিয়ম লাগু হতে দেননি বলে অভিযোগ। আর এই কারণেই সেই সময় অভিষেক কোণঠাসা হয়েছিলেন, আর এখন দল হচ্ছে।
তৃণমূলের একাংশের মতে, পার্থবাবু নিজে প্রভাব খাটিয়ে আজ তৃণমূলের মান সম্মান ডোবাচ্ছেন। এছাড়াও দল চাইছে অবিলম্বে যেন অভিষেকের সেই দাওয়াই কার্যকর হয়, নাহলে আর কিছুদিন পর পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাবে। দলের বড় অংশের দাবি, দলনেত্রী যেন শীঘ্রই অভিষেকের মডেল চালু করেন। অনেকেই চাইছেন যে, পার্থবাবু যেন এবার নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন।