বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় বিজেপি (BJP) বধে তৃণমূলের (TMC ) প্রধান অস্ত্র যে ছিল প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) তা একপ্রকার জলের মতো স্বচ্ছ এখন। লোকসভার পর থেকে প্রায় বছর দুয়েক ধরে দহীরে ধীরে ছক সাজিয়ে তবেই সফল হয়েছে বাংলা দখলের স্বপ্ন। একুশের নির্বাচনে জয়ের পরেই সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি (Abhishek Banerjee) জানিয়েছিলেন, আগামীদিনে অন্যান্য রাজ্যেও ক্ষমতা দখলের জন্য ঝাঁপাবে তৃণমূল। এখন থেকে তারা আর শুধু বিধায়ক সংখ্যা বাড়ানোর কথা চিন্তা করবেন না। সেই তালিকা উপরের দিকেই যে স্থান ত্রিপুরার এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর মাস কুড়ি পরে নির্বাচন ত্রিপুরায়, আর তার আগে এখন পিকের টিম মরিয়া ছক সাজাতে।
জানা গিয়েছে বাংলার মতো একইভাবে ধীরে ধীরে ত্রিপুরাতেও ঘাঁটি শক্ত করছে তৃণমূল, ২ মে ফল প্রকাশের পর ইতিমধ্যেই বিজেপি এবং বাম দলগুলি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার কর্মী। যা নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত রাজ্য নেতৃত্ব। শোনা যাচ্ছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগস্টে ত্রিপুরা যেতে পারেন অভিষেক। সেখান থেকেই আগামী দিনে দলের প্রতি বার্তা দেবেন তিনি।
অনেকেই মনে করছেন বিজেপি থেকে বিশিষ্ট নেতা সুদীপ রায় বর্মন (Sudeep Roy Burman) যোগ দিতে পারেন তৃণমূলে। যদিও সুদীপ এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি বলেও শোনা যাচ্ছে তবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি জানিয়েছেন, পাঁচ ছয় মাসের মধ্যে রাজনৈতিক চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। সেই সূত্র ধরে এখন অনেকেই আশায় বুক বাঁধছেন। একুশে জুলাই শুধু দিল্লিতে নয় ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গাতেও তৃণমূল নেত্রীর ভাষণ শোনার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য নেতৃত্ব। তাদের মতে মমতা ব্যানার্জিকে (Mamata Banerjee) নিয়ে ত্রিপুরাতেও যথেষ্ট আবেগ রয়েছেন মানুষের মধ্যে। আগামী দিনে যা প্রতিফলিত হতে পারে ভোটবাক্সে।
ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি আশিসলাল সিং জানান, “আগস্টে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমাদের রাজ্যে যাওয়ার কথা। প্রত্যেকেই তাঁকে চাইছেন। দল প্রতিদিনই কলেবরে বাড়ছে। চাহিদা তৈরি হয়েছে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনেরও। আগরতলার দুই প্রান্ত ছাড়াও উদয়পুর, ধর্মনগরে জায়ান্ট স্ক্রিনে শোনানো হবে নেত্রীর ভাষণ। যদিও প্রায় সব ব্লকে এই সভা জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানোর দাবি রয়েছে কর্মীদের।”
অনেকের মতে, আগামী লোকসভা নির্বাচন নিজেদের দাবি আরও মজবুত করতে তৃণমূলের দরকার সর্বভারতীয় দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। আর সেই কারণেই বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরা এবং আসামকে আরও বেশি করে টার্গেট করতে চাইছে তৃণমূল। সূত্রের খবর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আগামী দিনের হোম ওয়ার্ক। পিকের টিমের তরফ থেকেও বার্তা পাঠানো হয়েছে জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন তৃণমূল নেতৃত্বকে। আগামী দিনে অবশ্য তৃণমূলের ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় কিনা তা বলে দেবে সময়ই।