ত্রিপুরার ১০৩২৩ শিক্ষক মামলার নিষ্পত্তি সুপ্রিম কোর্টে, ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর চাকুরী থাকছে না

গোবিন্দ দেবনাথ আগরতলা, ২ আগস্ট

 

ত্রিপুরার ১০,৩২৩ শিক্ষক মামলার নিষ্পত্তি হল শুক্রবার৷ ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট বহু চর্চিত এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছেন৷ এ সংক্রান্ত সব মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে৷ ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর ওইসব এডহক শিক্ষকদের চাকুরি আর থাকছে না৷ রাজ্যের আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ সুপ্রিমকোর্টের এই সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, মামলায় রাজ্য সরকারের জয় হয়েছে৷

 

বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষক নিয়োগকে বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেছিল হাইকোর্ট৷ হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল চাকুরিচ্যুতরা৷ সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছিল৷ বর্তমান রাজ্য সরকার দায়বদ্ধতার কারণে সুপ্রিমকোর্টে ওই ১০,৩২৩ জন এডহক শিক্ষকের চাকুরীর সময়সীমা আরও ২ বছর অর্থ্যাৎ ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত চাকুরী বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছিল৷ এর স্বপক্ষে রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ আদালতে জানিয়েছিল, রাজ্যের গুণগত শিক্ষা ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক শিক্ষক নেই৷ শুধু তাই নয় পর্যাপ্ত পরিমাণ বিএড এবং বিএলএডও রাজ্যে নেই৷ সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন দিয়ে রাজ্যের স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন বহাল রাখার জন্য ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে আরও দু বছর বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার৷

IMG 20190802 WA0091 3

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্ট ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এডহক ভিত্তিতে চাকুরিতে বহাল রাখার নির্দেশ দেন৷ শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টে এই মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে৷ এক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্ট জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দপ্তর কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ রাজ্য সরকার লোক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কিনা, বিএড কোর্স করানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে কিনা, এছাড়া অন্যান্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলিও জানতে চেয়েছে সুপ্রিমকোর্ট৷ রাজ্য সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে সর্বোচ্চ আদালত সন্তোষ প্রকাশ করেছে বলে জানান রাজ্যের আইনমন্ত্রী৷ আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ আরও জানান, তৎকালীন চিফ সেক্রেটারি সঞ্জিব রঞ্জন এবং শিক্ষাদপ্তরের সচীব সুশীল কুমার সহ অপর একজনের বিরুদ্ধেও সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল৷ সেই পিটিশনও খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট৷ অপর ১৫ জন আরও একটি পিটিশন দাখিল করেছিল সেই পিটিশনও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে৷ অর্থাৎ ১০,৩২৩ এর মামলা পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়ে গিছে৷

প্রসঙ্গক্রমে আইনমন্ত্রী জানান, সুপ্রিমকোর্টকে জানানো হয়েছিল গত বছর ১০০০ ছেলেমেয়েকে বহির্রাজ্যে বিএড করানোর জন্য পাঠানো হয়েছে৷ এছাড়া বিএড করানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনুপ্রেরণা যোজনা নামে একটি স্কীমও চালু করা হয়েছে৷ আইনমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্যের শিক্ষক স্বল্পতা দূর করার জন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এক কালীন ছাড় দেওয়ার জন্য মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক তাতে সম্মতি দিয়েছে৷ আইনমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, আগামী অক্টোবর নভেম্বর মাসে পর্যাপ্ত সংখক নিয়োগ করা হবে৷ প্রায় ৯০ হাজার আবেদন পত্র জমা পড়েছে বলে তিনি জানান৷

ad

সম্পর্কিত খবর