বাংলাহান্ট ডেস্ক : যুগ যুগ ধরে মানুষের সব থেকে বিশ্বস্ত ও অনুগত প্রাণী হিসাবে নিজেদের প্রমাণ করেছে কুকুর প্রজাতি। সেই আদিমকাল থেকেই মানুষের সাথে সখ্যতা তৈরি হয় কুকুরের। তবে আজ আপনাদের এমন এক কুকুরের গল্প শোনাতে চলেছি যাকে ইতিহাস মনে রেখেছে বিশ্বের সবথেকে প্রভুভক্ত কুকুর হিসেবে।
প্রিয় মনিব ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছে তা বুঝতে পারেনি এই কুকুরটি। প্রিয় মনিবকে একটিবার দেখার জন্য হাচিকো (Hachiko) নামের জাপানের এই কুকুরটি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এসে অপেক্ষা করত। একদিন বা দুদিন নয়, মনিবের জন্য হাচিকো অপেক্ষা করেছিল ন’বছর ন’মাস ১৫ দিন। জাপানের ওদাতে শহরে ১৯২৩ সালের নভেম্বর মাসে জন্ম হয় হাচিকোর।
ফিরে দেখা হাচিকোর (Hachiko) ইতিহাস
আকিতা প্রজাতির এই কুকুরের গায়ের রং ছিল বাদামি। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিভাগের অধ্যাপক হিদেসাবুরে উয়েনো হাচিকোকে গ্রহণ করেন পোষ্য হিসাবে। জাপান (Japan) সরকারের পক্ষ থেকে সেই সময়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত আকিতা প্রজাতির কুকুরকে। প্রফেসর উয়েনো তখন প্রতিদিন হাচিকোর সাথে দেখা করতে যেতেন শিবুয়া স্টেশনে।
আরোও পড়ুন : টাকার জন্য ব্ল্যাকমেল! সুইসাইড নোটে মহিলার নাম! তৃণমূল কাউন্সিলর মৃত্যুতে তোলপাড় করা মোড়
১৯২৫ সালে মাথায় রক্তক্ষরণের ফলে হঠাৎ মৃত্যু হয় প্রফেসর উয়েনোর। হাচিকোর সাথে বিকেলে যে সময়টাতে প্রফেসর উয়েনো দেখা করতে আসতেন, প্রতিদিন সেই সময় স্টেশনে গিয়ে মনিব উয়েনোর জন্য অপেক্ষা করত হাচিকো। এইভাবে একটানা ৯ বছর ৯ মাস ১৫ দিন সেই স্টেশনে এসে বসে থাকত হাচিকো প্রিয় মনিবকে একটিবার দেখবে বলে।
Be loyal to Hachiko and Hachiko will be loyal to you. pic.twitter.com/HeG8QmgHtJ
— Hachiko (@hachikocoinsol) October 18, 2024
১৯৩৫-র ৮ মার্চ মৃত্যুবরণ করে হাচিকো। মৃত্যুর দিন অব্দি কোবায়াশি হোম ছিল হাচিকোর ঠিকানা। শিবুয়া স্টেশনে হাচিকোর মৃত্যুর পর বসানো হয় তার ব্রোঞ্জের মূর্তি। এমনকি হাচিকোর কাহিনী জায়গা করে নিয়েছিল জাপানের স্কুল পাঠ্যে। প্রভুভক্তির এক উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে আজও ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে এই চারপেয়ের নাম।