জোরালো হল উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবি! বারলার হাত শক্ত করলেন বিজেপির দুই বিধায়ক

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ক্রমাগত আরও জটিলতা বাড়াচ্ছে বঙ্গভঙ্গের দাবি। কিছুদিন আগে প্রধানত এই দাবি তুলেছিলেন আলিপুরদুয়ারের BJP সাংসদ জন বারলা (John Barla)। তার দাবি ছিল, উত্তরবঙ্গ চিরকাল দক্ষিণবঙ্গের কাছে বঞ্চিত থেকে গিয়েছে। আসাম নেপাল সীমান্ত বরাবর জাতীয় সড়কের ধারে বাস করছেন বাংলাদেশি রোহিঙ্গারা। তাদের ভোটার কার্ড হয়ে যাচ্ছে, রেশন পেতেও শুরু করেছেন তারা। কিন্তু উত্তরবঙ্গের মানুষ বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। আর সেই কারণেই পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দরকার। দল সেভাবে সমর্থন না করলেও নিজের দাবিতে সম্পূর্ণভাবে অনড় ছিলেন বারলা। এবার ফের একবার তার সমর্থনে একই কথা বললেন বিজেপির উত্তরবঙ্গের আরও দুই বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় এবং আনন্দময় বর্মন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিকে সরাসরি সমর্থন না করলেও উত্তরবঙ্গ সফরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, প্রশাসনের অপশাসনে হতাশ হয়েই মানুষ আলাদা রাজ্যের দাবি করছে। এবার ফের একবার তার কথার সূত্র ধরেই যেন একই রকম মন্তব্য করলেন ডাব গ্রাম ফুলবাড়ীর বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ”সচিবালয় হিসেবে ‘উত্তরকন্যা’ তৈরি হয়েছে শুধুমাত্র চোখে ধুলো দেবার জন্য। ওখানে শুধু আড্ডাই চলে, কোনও কাজ হয় না। উত্তরবঙ্গকে রাজ্য করলে ভাল, নইলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হোক। তাহলে অনেক কাজ হবে।”

এর আগে আলাদা রাঢ়বঙ্গের দাবি তুলেছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁও। যার জেরে ক্রমশই বিজেপির অন্দরে বঙ্গভঙ্গের দাবি আরও জোরদার হচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু পরিষ্কার জানিয়ে ছিলেন, ভোটে জিতলে বঙ্গভঙ্গ হবে একথা আমরা কখনও বলিনি।

John Barla

কিন্তু শুধু শিখা চট্টোপাধ্যায় নয়, জন বারলার মন্তব্যকে সমর্থন করে এদিন বয়ান দেন মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মনও। তার মতে, ”এই দাবি উত্তরবঙ্গের মানুষের। আর সেটাই বলেছেন আমাদের সাংসদ। আলাদা রাজ্য হলে অসুবিধা কোথায়। বরং উন্নয়ন হবে আমাদের।”

ইতিমধ্যেই বিজেপির এই বঙ্গভঙ্গ নীতির সমালোচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়েছেন, কোনভাবেই বঙ্গভঙ্গ করতে দেবেন না তিনি। সমালোচনা করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। একথা ঠিক যে শুধু শাসক দল নয় বারলার এই মন্তব্য নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে বিজেপির অন্দরেও। কারণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গভঙ্গের দাবি আরও বেশি জোরদার হলে আখেরে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের ক্ষতি হতে পারে। এখন আগামী দিনে কোন দিকে গড়ায় পরিস্থিতি, নজর থাকবে সকলের।

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর