বাংলাহান্ট ডেস্ক : মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে নথিপত্র ছাড়া চলে গেলে শুধু একের পর এক বিড়ম্বনাই নয়, অনুপ্রবেশের অপরাধে হতে পারে জেলও। কিন্তু পশুপাখিদের ক্ষেত্রে ব্যাপার স্যাপার নিয়ম কানুন সবই আলাদা। কাঁটাতারের বেঁড়ার অস্তিত্ব তাদের কাছে নেই। সমস্ত জীবজন্তুর কাছেই একটাই পৃথিবী, একটাই ভুখন্ড। আর ঠিক এভাবেই পথ ভুলে বাংলাদেশ চলে যায় ভারতের দুটি বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ। এবার তাদের উদ্ধার করে দিল্লির হাতেই তুলে দিতে চলেছে ঢাকা।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘলিয়া থেকে উদ্ধার করা হয় একটি কচ্ছপ। এর পর আবার ৫ মার্চ পায়রা নদীতে মৎসজীবীদের জালে ধরা পরে অপর একটি কচ্ছপ। বিলুপ্ত প্রায় এই বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপ দুটির শরীরে লাগানো ছিল ভারতের ট্রান্সমিটার। ফলে সেদেশের বিশেষজ্ঞদের বুঝতে কোনও মতেই অসুবিধা হয়নি যে ভারত থেকে সীমানা পার করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে তারা। আপাতত রবিবার বিকেল থেকে বাংলাদেশের করমজল বন্যপ্রাণী কেন্দ্রেই রয়েছে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপদুটি।
জীবতত্ত্ববিদ শ্রীপর্ণা দত্ত জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশে উদ্ধার হওয়া আমাদের কচ্ছপ দুটির পিঠে লাগানো ট্রান্সমিটার সচল রয়েছে। কচ্ছপী গুলিকে অতি শীঘ্র দেশে ফিরিয়ে নতুন করে ট্রান্সমিটার লাগিয়ে আবার ছেড়ে দেওয়া হবে। বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের জীবন নিয়ে গবেষণার জন্য গত ১৯ জানুয়ারি ১০ টি কচ্ছপের পিঠে ট্রান্সমিটার লাগিয়ে তাদের নদীতে ছাড়া হয়েছিল। এদেরই মধ্যে দুটি চলে যায় বাংলাদেশে।’ আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছেন লখনইয়ের টাইগার প্রজেক্টে কর্মরতা ওই জীবতত্ত্ববিদ।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের পটুয়াখালি বনবিভাগের বিভাগীয় বন আধিকারিক আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, ‘শনিবার একটি ট্রান্সমিটার লাগানো কচ্ছপ ধরা পড়ে পাথরঘাটার পায়রা নদীতে। বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপটিকে মৎসজীবীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা।’ দুটি কচ্ছপকেই তাদের স্বদেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করছে ঢাকার প্রশাসন।