বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও অগ্নিগর্ভ। বাংলাদেশ (Bangladesh)। সে দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের (Minority Hindu) উপর অত্যাচার যেন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাড়ার ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সাধারণ ঝামেলা গড়াল চরম অশান্তিতে। মোংলা এলাকায় (Mongla) গভীর রাতে মন্দিরে ঢুকে ঘটল কালী ও শিব প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা।
হাসিনা সরকারে একাধিক প্রতিশ্রুতি, কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের পরও বন্ধ হচ্ছে না উগ্র মৌলবাদী সংগঠন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সন্ত্রাস। এর আগে কিছুদিন আগেই ফেসবুকে (Facebook) ধর্মীয় বিষয়কে খাড়া করে নড়াইলে এক শিক্ষককে জুতোর মালা পরিয়ে হেনস্তা করা হয়। নড়াইলের লোহাগড়ার সাহাপাড়ায় পরিকল্পিত অশান্তি ছড়িয়ে বহু হিন্দু বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মাগুরা জেলা শহরে সদ্য বিধবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা লীলা সরকারের বাড়িতে বস্তা বস্তা ময়লা ফেলে হেনস্তা করা হয়েছে বারবার।
বাগেরহাটের মোংলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে একটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর (Vandalized) করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে বলে জানা যাচ্ছে। কানাইনগর গ্রামের শহিদ চৌধুরীর ছেলে রাহাত চৌধুরী, হাবিব মুন্সির ছেলে নয়ন মল্লিক ও জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আসিফ খানকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, শনিবার গভীর রাতে মোংলা উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর সার্বজনীন মন্দিরে থাকা কালী ও শিবের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।
মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বিরোধ বাঁধে। সেই আক্রোশ গিয়ে পড়ে মন্দিরের প্রতিমার উপর। মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলাকে ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরেই মন্দির লাগোয়া লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে খেলতে আসা স্থানীয় ছেলেদের। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ এলাকার ছেলেরা আবার ওই মাঠে খেলতে যায়। সেখানে আবারও শুরু হয় ঝামেলা। উভয়পক্ষই একে অপরকে হুমকি দিতে থাকে। কিছুক্ষণ ঝামেলা চলার পর খেলতে আসা ছেলেরা সেখান থেকে চলে যায়।
এরপরই গভীর রাতে মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুরের কাণ্ড ঘটায় তারা। মোংলা উপজেলা পুজো উদযাপন পরিষদের সভাপতি পীযূষ মজুমদার জানান, ‘শনিবার বিকেলে কানাইনগর মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে মন্দির কমিটি ও খেলতে আসা ছেলেদের মাঝে ঝগড়াঝাটি হয়। এরপর সেখানে প্রতিমা ভাঙচুর কাণ্ড ঘটে।’ মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলতে নিষেধ করলে শনিবার বিকেলে দু’পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তারপরই গভীর রাতে প্রতিমা ভাঙচুর চালায় তারা। তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক করা হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হবে।’
মন্দির কমিটির সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে মন্দিরে গিয়ে ভাঙা প্রতিমা দেখতে পান তিনি। দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ‘মন্দিরের সামনে একটি মাঠ রয়েছে। সম্প্রতি বালি দিয়ে ঐ মাঠ ভরাট করা হয়েছে। শনিবার বিকালে ১৫ থেকে ১৬ জন যুবক ঐ মাঠে ফুটবল খেলছিল। এসময় আমি তাদের মাঠে খেলা করতে মানা করি। এতেই ঐ যুবকরা আমার ওপর খেপে যায়। তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হট্টগোল তৈরি হয়। তখন ঐ যুবকরা আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ফিরে যায়।’