বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দু’বছর জেলে থাকার পর বাড়ি ফিরছেন কেষ্ট। বীরভূমে এখন সাজো সাজো রব। যেই বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে এতদিন একটা মাছিরও দেখা মিলতো না অনুব্রত (Anubrata Mondal) জামিন পেতেই সেই বাড়ির বাইরে ভিড় জমাচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। বাড়িতে পড়ছে নীল রঙের প্রলেপ। এরই মাঝে কেষ্টকে নিয়ে তৃণমূলের (Trinamool Congress) দুই গোষ্ঠীর কোন্দল এল প্রকাশ্যে।
দুর্দিনে কে কেষ্টর পাশে ছিলেন, কে আগে ‘দাদা’র দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন এই নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের যুযুধান দুই তৃণমূল নেতার হোয়াটস্যাপে বাকযুদ্ধ। ইতিমধ্যেই তা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চৰ্চা। ভাইরাল হোয়াটস্যাপ চ্যাটে দেখা যাচ্ছে, অনুব্রতর জামিনের খবর শুনে আউশগ্রাম তৃণমূলের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আউশগ্রাম-২ ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি অরূপ মিদ্যা।
পাশাপাশি আউশগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুল লালনকে কটাক্ষ করে অরূপ লেখেন, ”মহাগুরুর জামিনের খবর পেয়ে গোটা আউশগ্রাম আনন্দে। শুধু পিতা-পুত্র বাদ।” জবাব দিতে ছাড়েননি লালনও। পাল্টা তিনি লেখেন, ”যখন কেষ্টদা জেলে গেল তখন ভাবল লালনের সব শেষ। কেষ্টদাকে বুড়ো সিংহ বলেছিলে। আজ আবার কেষ্টদা জেল থেকে বেরোচ্ছে বলে লাইন দিচ্ছ?…আমাদের তো একটাই বাবা। তাই এক জনকেই বাবা বলি।”
পাল্টা দিয়ে অরূপ ফের লেখেন, ”বেশি ফোঁস করার চেষ্টা করিস না। জনগণ নেউল হয়ে গেলে পালানোর পথ পাবি না।” লালনের পাল্টা জবাব, ”ঠিক যে ভাবে তুই ভাল্কি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিস।” উল্লেখ্য, বিগত সময়ে একাধিকবার তৃণমূলের এই দুই নেতার কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। কেষ্ট জামিন পাওয়ার পরও সেই ঝামেলা অব্যাহত।
২০২২ সালের আগস্ট মাসে গরু পাচার মামলায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপর দু’বছর অতিবাহিত হয়েছে। মাঝের দীর্ঘ সময়ে আউশগ্রামে তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। কেষ্ট জেলে যাওয়ার পর আউশগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রামকৃষ্ণ ঘোষকে। তার জায়গায় আনা হয় কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আব্দুল লালনকে। এই লালনের সাথে অরূপ মিদ্যার সম্পর্ক কারও অজানা নয়।
আরও পড়ুন: সামনেই পাঁচ-পাঁচদিন ছুটি…! কবে কবে বন্ধ থাকবে অফিস-কাছারি? রইল সম্পূর্ণ তালিকা
অরূপবাবু অবশ্য পরে ঝামেলার কথা অস্বীকার করেন। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ”আমি কারও সঙ্গে কোনও সংঘাতে যাইনি। আমি বরাবরই কেষ্টদার সঙ্গে ছিলাম। পরেও থাকব। বর্তমানে আমি দিল্লিতে আছি। জামিন হওয়ার পর কেষ্টদাকে নিয়ে যাব।” এদিকে লালন বলেন, ”কেষ্টদাকে বলে ওকে আমিই তো তৃণমূলে নিয়ে এসেছি। ও আগে ছিল হার্মাদ।” পাশাপাশি ‘দাদা’কে ঘরে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনিও ছেলে শেখ সঞ্জু-ও দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।