বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত কয়েক বছর ধরে পড়শি দেশ পাকিস্তান (Pakistan) তুমুল আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ওই দেশে এই সঙ্কট ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন পুরোপুরি ঋণের ওপরে চলছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছে যে, তারা যে দেশগুলি থেকে ঋণ নিয়েছে তা ফেরতও দিতে পারছে না। এই আবহেই এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, শক্তি খাতে ঋণ রিশিডিউলিংয়ের জন্য পাকিস্তান চিনা আধিকারিকদের সাথে আলোচনা করছে।
চিনের কাছে ভিক্ষে চাইছে পাকিস্তান (Pakistan):
এদিকে, ঋণ থেকে মুক্তি পেতে হত বৃহস্পতিবার চিনে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের (Pakistan) অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব। বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে পিপলস ব্যাঙ্ক অফ চায়নার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব শুক্রবার চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর প্যান গংশেংয়ের সাথে দেখা করেছেন এবং দ্বিপাক্ষিক আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে মতামত বিনিময় করেছেন। তবে, এই আলোচনার সাথে যুক্ত অধিকারীরা আলোচনার ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা কাঙ্খিতভাবে কাজ না হলে বিদেশি বিনিয়োগ এবং বিনিময় হারের স্থিতিশীলতার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে। ডন নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, “আমরা বিশ্বাস করি যে চিন শক্তি খাতের ঋণ পুনঃনির্ধারণের জন্য পাকিস্তানের অনুরোধ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবে না। তবে শেষ ফলাফলটি হতাশাজনক বলে মনে হচ্ছে।”
পাকিস্তানে চিনের টাকা: তাঁরা জানিয়েছেন, চিন প্রথম থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চায়নি, যার কারণে এই সফর বিলম্বিত হয়েছে। শক্তি ক্ষেত্রে ঋণ সংক্রান্ত আলোচনায় পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গে চিনের মতবিরোধ দেখা যায়। চিন কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগকারী। এদিকে, হংকং থেকে আসা বিনিয়োগ পাকিস্তানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যা চিন দ্বারা অনুমোদিত বলে মনে করা হয়। তবে, চিনের বিনিয়োগ কমেছে। কিন্তু তা সত্বেও ২০২৪ সালের অর্থবর্ষে এফডিআই-এর বৃহত্তম উৎস হিসেবে চিন রয়েছে। চিন এবং হংকং থেকে বিনিয়োগ পাকিস্তানের মোট এফডিআইয়ের প্রায় অর্ধেক। যা ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: জীবনে আসবে শান্তি! শ্রাবণ মাসের সোমবারে এই রঙের পোশাক পরে করুন মহাদেবের পুজো, মিলবে আশীর্বাদ
চিন কি পাকিস্তানের ওপর ক্ষুব্ধ: এদিকে, সিনিয়র ব্যাঙ্কার এসএস ইকবাল চিনের ওপর পাকিস্তানের (Pakistan) ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “চিনের ওপর আমাদের নির্ভরতা বেড়েছে। কারণ আমরা শক্তি খাতে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করছি।” তিনি আরও বলেন য, চিন ঋণ রিশিডিউলিং প্রদান করে চলেছে। যা পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।
আরও পড়ুন: হু হু করে বাড়ছে পোর্টিং! TRAI-র দেওয়া তথ্য দেখে চোখ ছানাবড়া সাধারণ মানুষজনের
জানিয়ে রাখি যে, ২০১৮ সালে, চিন পাকিস্তানের (Pakistan) বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার বাড়াতে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। এই ঋণ ২০১৮ সাল থেকে প্রতি বছর রোল ওভার করা হয়েছে। এই বছরের মার্চ মাসে এটি ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, এটি ২০২৪-এর ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রোলওভার করা হয়। ইকবাল বলেন, “চিন আমাদের এত অর্থ দেয়, কিন্তু আমাদের স্টেট ব্যাঙ্ক চিনা বিনিয়োগকারীদের ১.৮ বিলিয়ন ডলারের মুনাফা তুলতে বাধা দেয়। এমতাবস্থায়, চিনারা চুপচাপ বসে থাকবে বলে আমরা আশা করতে পারি না।”