ব্যাঙ্কে ৪৮,২৬২ কোটি টাকা জমা কিন্তু নেওয়ার কেউ নেই! টেনশন বাড়ছে RBI-র

বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশের ব্যাঙ্কগুলিতে ক্রমশ বেড়েই চলেছে দাবিহীন আমানতের (Unclaimed Deposits) পরিমান। অর্থাৎ, এই জমাকৃত টাকাগুলির কোনো দাবিদার পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি এই নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে RBI (Reserve Bank of India)। পাশাপাশি, এই বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে বাড়তি সতর্ক হওয়ার নির্দেশও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।

কিভাবে জমছে দাবিহীন টাকা: RBI জানিয়েছে যে, অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, সেভিংস ও কারেন্ট অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি, মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিক্সড ডিপোজিটের টাকাতেও ১০ বছর ধরে কোনো লেনদেন হচ্ছে না। এমতাবস্থায়, বহুক্ষেত্রেই মেয়াদের ১০ বছর পরও সেই টাকা কেউ দাবিও করছেন না। আর তখনই জমাকৃত ওই টাকাকে দাবিহীন আমানত (Unclaimed Deposits) বলে ঘোষণা করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবছরই বাড়ছে এর পরিমান: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বিগত বছরগুলিতে কার্যত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাবিহীন অর্থের পরিমান। গত আর্থিক বছরে দাবিহীন অর্থের পরিমান ছিল ৩৯,২৬৪ কোটি টাকা। যদিও, RBI-এর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই পরিমান বেড়ে ৪৮,২৬২ কোটি টাকা হয়েছে। এমতাবস্থায়, যে রাজ্যগুলিতে এই ধরণের অর্থ সবচেয়ে বেশি রয়েছে সেগুলির ওপরেই বিশেষ দৃষ্টি দিতে চলেছে RBI।

এই রাজ্যগুলির ব্যাঙ্কগুলিতে রয়েছে সর্বাধিক দাবিহীন অর্থের পরিমান: জানা গিয়েছে, বর্তমানে তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, বিহার এবং তেলেঙ্গানার ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা জমা রয়েছে, যা কেউ দাবি করছেন না।

কেন বাড়ছে এই টাকার পরিমান: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অধিকাংশজন একাধিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করলেও তাঁরা তাঁদের পূর্ববর্তী সেভিংস অ্যাকাউন্ট বা কারেন্ট অ্যাকাউন্টগুলি আর বন্ধ করছেন না। যার ফলে ওই অ্যাকাউন্টগুলি নিষ্ক্রিয় হয়ে থেকে যাচ্ছে এবং সেখানে থাকা অর্থ দাবিহীন টাকার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছে।

আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন অনেক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেগুলিতে অ্যাকাউন্টধারীরা তাঁদের অ্যাকাউন্টে নমিনি আপডেট পান না। যার ফলে, ওই অ্যাকাউন্টধারীর মৃত্যুর পরে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে গেলেও সেখানে পড়ে থাকা টাকা দাবিহীন অবস্থায় থেকে যাচ্ছে।

 

কি করা হয় এই টাকাগুলির: জানা গিয়েছে, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে ওই দাবিহীন অর্থকে সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের “Depositor Education and Awareness” (DEA) ফান্ডে পাঠিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি। যদিও, পরবর্তীকালে ব্যাঙ্কের কাছে এই টাকা সুদ সহ ফেরত চাইতে পারেন দাবিদাররা। তবে সেক্ষেত্রে, দাবি তো দূর, বরং ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে দাবিহীন অর্থের পরিমান। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে RBI-র।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর