বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উৎসবের মরশুমে প্রথমবার কলকাতার (Kolkata) বাতাসে কমল বায়ু দূষণের হার। রবিবার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে দেখা গিয়েছে কলকাতা (Kolkata) শহরে বাতাসে দূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। সাধারণত প্রত্যেক বছর নভেম্বর মাস পড়তেই বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকে। আসলে দুর্গা পুজো কালীপুজো থেকে শুরু করে ছট পুজোকে কেন্দ্র করে দেদার বাজি ফাটানোয় বাতাসে দূষণের মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়।
এক ধাক্কায় কমল কলকাতার (Kolkata) বায়ুদূষণ
আর এইভাবে লাগামছাড়া পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষের অসুখ-ও বাড়তে থাকে। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে কিংবা যারা চর্ম রোগে ভুগছেন তাদের এই সময় সতর্ক থাকা খুবই জরুরী। তবে এবছর কালী পুজো মিটতেই কলকাতার (Kolkata) বাতাসে দূষণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। তাই দূষণ কমাতেই একেবারে উঠে পড়ে লেগেছিল কলকাতা পুরসভা।
রবিবার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল অবিশ্বাস্য ফলাফল। অনেক বেশি উন্নত হয়েছে কলকাতার বাতাসের মান। এই প্রথম উৎসবের মরশুমে এতটা ভাল ফল হয়েছে কলকাতার।আগামীদিনেও এই সাফল্যকে ধরে রাখতে একগুচ্ছ উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তাই কলকাতার সংলগ্ন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার ছোট বড় গাছে আগে দিনে একবার জল দেওয়া হতো কিন্তু এখন থেকে দিনে মোট তিনবার করে জল দেওয়া দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও স্প্রিংকলার ওয়াটার স্প্রে-র গাড়ি দিয়ে কলকাতার রাস্তায় জল ছড়ানো হচ্ছে।মিস্ট ক্যাননের মাধ্যমেওজল ছাড়ানো হচ্ছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। এছাড়া দূষণ কমাতে পুরসভার তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্মাণ কাজ করার সময় বিশেষ করে বহু তলের ক্ষেত্রে সবুজ কাপড় দিয়ে ঢেকে কাজ করা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি খোলা জায়গায় কংক্রিট, বর্জ্য বা সিমেন্ট বালি ফেলে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই বৃষ্টি! আজ দক্ষিণবঙ্গের কোন জেলায় কেমন থাকবে আবহাওয়া? ওয়েদার আপডেট
সেই সাথে দূষণ কমাতে লাগাতার গাছে জল দিয়ে পাতা থুয়ে দেওয়া, বাতাসে জল ছেটানোর পাশাপাশি রাস্তায় জল দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। কর্তৃপক্ষের দাবি কলকাতায় যে হার দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছিল তারপরেই গত রবিবার কলকাতার বায়ু দূষণের মাত্রা আপাতত অনেকটাই কম। এই ধারা বজায় রাখতেই শীতের কয়েক মাস নিয়ম করে শহরের সমস্ত গাছপালা, রাস্তা ঘাট এবং বাতাসে জল স্প্রে করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। পুরসভার জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এই কাজ করে চলেছে।
এইমুহূর্তে কলকাতা পুরসভার কাছে মোট দুটি মিস্ট ক্যানন আছে এছাড়াও আছে ৩৫টি ওই ওয়াটার স্প্রিংকলার গাড়ি রয়েছে। আপাতত প্রতিটি ওয়ার্ডে মোট দুটি করে স্প্রিংকলার বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন রাস্তায় এবং গাছে নিয়মিত জল দেওয়ার কাজ করে বাতাসে দূষণের মাত্রা কমানো গেলেও তা স্বল্পমেয়াদী পন্থা। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হলে শহরের বুকে ডিজেল বা পেট্রোল জাতীয় গাড়ি থেকে নির্গত হওয়ার ধোঁয়া কিংবা নির্মাণ ক্ষেত্রে ধুলো নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি জরুরী। তাছাড়া এই সময় মাস্ক পরার অভ্যাসও ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।