‘স্যাটেলাইটে মিসাইল ছুড়ব না’, প্রতিজ্ঞা তিন শক্তিধর দেশের! কী বলছে ভারত?

বাংলাহান্ট ডেস্ক: গত বছর বিশ্বের সমস্ত দেশের কাছে অ্যান্টি স্যাটেলাইট (Anti-Satellite Missile) ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা না করার আবেদন জানিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তার কারণ এই পরীক্ষাগুলির ফলে মহাকাশে বিপুল পরিমাণ আবর্জনা ছড়িয়ে পড়বে। এর ফলে স্পেস স্টেশন এবং অন্যান্য মহাকাশ মিশন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই আবেদনে সাড়া দিয়েছে ১৩টি দেশ। তারা জানিয়েছে, মহাকাশে কোনও রকম অ্যান্টি স্যাটেলাইট পরীক্ষা করা হবে না।

এই তালিকায় রয়েছে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া এবং ইতালির মতো দেশের নাম। গত বছর এপ্রিলে দেশগুলির কাছে এই আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তারপর সেপ্টেম্বরে এই প্রস্তাব পাস হয় রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায়। ডিসেম্বর অবধি ৯টি দেশ এই আবেদনে সাড়া দিয়েছিল। এই দেশগুলি হল অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং ব্রিটেন। এরপর বাকি দেশগুলিও রাষ্ট্রপুঞ্জের এই আবেদন সাড়া দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, ২০২১-এর নভেম্বরে রাশিয়া তাদের মৃত স্যাটেলাইট কসমোসকে ক্ষেপনাস্ত্র ছুঁড়ে ধ্বংস করে ফেলে। খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে এই স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষ মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনকে একাধিক বার তার জায়গা পরিবর্তন করতে হয়েছিল। রাশিয়ার এই কাজের ঘোরতর বিরোধিতা করে নাসা। বিগত কয়েক বছর ধরে চলা ASAT পরীক্ষার কারণে মহাকাশে ৬৮৫১টি স্যাটেলাইটের টুকরো ঘুরপাক খাচ্ছে। 

asat

প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরীক্ষা আসলে কী? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ASAT পরীক্ষা হল ক্ষেপনাস্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশে শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দেওয়া। ১৯৫৭ সালে ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলাকালীন আমেরিকা প্রথম এস্যাট ব্যবহার করে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। সেই ক্ষেপনাস্ত্রের নাম ছিল ‘বোল্ড ওরিয়ন’। তারপর সোভিয়েত ইউনিয়নও তাদের প্রথম এস্যাট ‘কো-অরবিটালস’ তৈরি করে। ২০০৭ সালে চিনও তাদের এস্যাট পরীক্ষা করে। 

পিছিয়ে নেই ভারতও। ২০১৯ সালে ভারত তাদের এক পুরোনো স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দেয়। সেই সময় ‘মিশন শক্তি’র অধীনে একটি বলিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। ভারতের কাছে বর্তমানে এস্যাট ক্ষেপনাস্ত্র ধ্বংস করার জন্য পৃথিবী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম রয়েছে। এটি মহাকাশে থাকা ক্ষেপনাস্ত্র অবধি ধ্বংস করে ফেলতে পারে। ভারতের এস্যাট ক্ষেপনাস্ত্রের রেঞ্জ ২০০০ কিলোমিটার। একটি স্যাটেলাইটের দিকে ঘণ্টায় ১৪৭০ থেকে ৬১২৬ কিলোমিটার গতিবেগে গিয়ে সেটিকে ধ্বংস করতে পারে। 

Avatar
Subhraroop

সম্পর্কিত খবর