অতীতে হয়তো আপনারা বহু সময় পাত্রকে গরুর গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে আসতে দেখেছেন; তবে একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছে সেই রীতি প্রায় নেই বললেই চলে। এখন ঘোড়ার গাড়ি চড়ে কিংবা শহরাঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষ চার চাকা গাড়ি নিয়ে বিয়ে করতে আসতেই পছন্দ করেন। তবে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বান্দাতে সেই পুরনো রীতির ঝলক পুনরায় একবার দেখা দিল, যেখানে পাত্রসহ তার গোটা পরিবারকে গরুর গাড়ি চড়ে আসতে দেখা গিয়েছে! তবে এর পিছনে আসল কারণ কি?
উত্তরপ্রদেশের বান্দাতে এক বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালীন গরুর গাড়ি করে পাত্র তার শশুর বাড়ি এসে পৌঁছায়! জানা গিয়েছে, বর্তমানে দেশে পেট্রোল-ডিজেলের ক্রমবর্ধমান দামের কারণে অতিষ্ঠ হয়েই তাদের এহেন সিদ্ধান্ত; স্বভাবতই, এই ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে গোটা রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে লোকের মুখে মুখে ঘুরে চলেছে এহেন অবাক করা কাণ্ডের কথা।
সূত্রের খবর, গত 9 ই মে তহশিল এলাকার মহুতা গ্রামের প্রধান সন্ধ্যা মিশ্র তাঁর ভাগ্নে অঙ্কিতের বিয়ে উপলক্ষ্যে প্রায় তিন ডজন তথা 36 টি গরুর গাড়ির আয়োজন করেন। মহুতা গ্রাম থেকে 4 কিলোমিটার দূরে শিবপুরী গ্রামে সেই গরুর গাড়ি করেই গোটা পরিবার এসে পৌঁছায় বলে খবর। শুধুমাত্র গরুর গাড়িই নয়, এছাড়াও বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায় একাধিক চমক। সমস্ত দেশীয় পদ্ধতি মেনে সম্পন্ন হয় বিবাহ; প্লাস্টিকের ব্যবহার ব্যান করা হয়, প্লেটের পরিবর্তে গ্লাস এবং দেশীয় পাতা ব্যবহার করে পাত্রের পরিবার; এমনকি মাটিতে বসেই সকলকে খাবার পরিবেশন করা হয়।
এই সকল আয়োজনের পেছনে দেশে পেট্রোল-ডিজেলের ক্রমবর্ধমান দামের প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে। সম্প্রতি, যেভাবে ভারতের বুকে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে চলেছে, তার প্রতিবাদেই কি এহেন আয়োজন? সন্ধ্যা মিশ্র জানান, “পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমরা গরুর গাড়ি নিয়ে যাত্রার সিদ্ধান্ত নিই। এতে যানবাহন এবং আয়োজন পিছু আমাদের এক টাকাও খরচ হয়নি, ফলে সেই টাকায় আমরা পাত্রীর গয়না তৈরি করতে সক্ষম হই।” এহেন বিয়ে প্রসঙ্গে খোদ পাত্র বলেন, “এইরকম বিয়ের পরিবেশন করতে পেরে আমরা খুশি। এটি সারা জীবন আমার মনে থেকে যাবে।”