সম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত টেট উত্তীর্ন চাকরিপ্রার্থীরা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অভিযোগ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সীমাহীন বেকারত্ব রাজ্যজুড়ে এক জ্বলন্ত সমস্যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে করতে শেষ হয়ে যাচ্ছে কত শিক্ষিত বেকারের জীবন তার ইয়ত্তা নেই। তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পর এই রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি(Mamata Banerjee)। ২১ জুন প্রকাশিত হয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ তালিকা। আদালতের স্থগিতাদেশ পেরিয়ে আত্মনিয়োগের স্বপ্ন দেখছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। ২০১৫ সালে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি তার নিয়োগ প্রক্রিয়া। ২০১৬ সালে ফলাফল বেরোনোর পরে আদালতের স্থগিতাদেশের জেরে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়।

অবশেষে মেধা নম্বরের ভিত্তিতে স্বচ্ছ ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ঠিকই কিন্তু সেক্ষেত্রেও কোয়ালিফিকেশন আপডেট করার সুযোগ পেলেন না চাকরি পরীক্ষার্থীরা। ২০১৬ সালের পর যে সমস্ত পরীক্ষার্থী বিএড এবং ডি এল এড ট্রেনিং পাস করেছেন, তাদের কোয়ালিফিকেশন আপডেট করার কোনো সুযোগ ছিল না অনলাইন পোর্টালে। যার জেরে স্বাভাবিকভাবেই সম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি প্রার্থী হিসেবে পিছিয়ে পড়বেন বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রী। ইতিমধ্যেই বিকাশ ভবন সহ বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে ডেপুটেশন জমা করেছেন তারা। চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যেও। তাদের একটাই অনুরোধ, সম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তারা সম সুযোগ পাচ্ছেন না। তাদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক সরকার।

IMG 20210703 WA0032

চাকরিপ্রার্থী এক ছাত্রের কথায়,”উচ্চ প্রাথমিকে আদালতের রায় দানের ফলে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী, যারা স্বচ্ছ নিয়োগ থেকে বঞ্চিত ছিল, তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। মহামান্য আদালত এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনকেও সাত দিনের সময় দিয়েছেন তারা। কিন্তু আমাদের বিষয়টি হল, ২০১৪ সালে যখন উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের বিজ্ঞাপন বের করা হয় তখন কোথাও উল্লেখ ছিল না চাকরিপ্রার্থীদের অবশ্যই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। তাই ধরে নেওয়া যায় সেই পরীক্ষায় যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় তারাও সমানভাবে সুযোগ পাবেন। যথারীতি আমরা পরীক্ষা দিই এবং কোয়ালিফাই করি। এখন দীর্ঘ এতগুলো বছর কেটে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, যারা সেসময় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিসেবে পরীক্ষায় বসে ছিলেন তারা আমাদের থেকে ১০ নম্বর এগিয়ে রয়েছেন। একটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এক নম্বরের মূল্যও মারাত্মক। কিন্তু আমরা যারা এতদিনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে গিয়েছি , তারা কিন্তু এই দশটা নম্বর থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”

IMG 20210703 WA0041

তিনি আরও বলেন, “তাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং মহামান্য আদালতের কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের দিকে একটু দৃকপাত করুন। যাতে আমরা আমাদের কোয়ালিফিকেশন আপডেট করার সুযোগ পাই।” কার্যত সব মিলিয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় এমনিতেই ৯০ নম্বরে অংশগ্রহণ করতে পারছেন তারা। যার জেরে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে পড়তে হতে পারে তাদের। অথচ সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন কলেজ থেকে টাকা পয়সা খরচ করে শিক্ষক হবার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন ছাত্র-ছাত্রীরাও । একদিকে যখন স্বচ্ছ নিয়োগের জন্য বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার এবং আদালত তখন সম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেন পিছিয়ে পড়বেন এই ছাত্র ছাত্রীরা। আর সেই কারণেই চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানালেন তারা।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর