শিখ দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ মার্কিন সাংসদের, বললেন ‘ভারতকে বন্ধু বলতে গর্ববোধ করি”

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ১৯৮৪ সালে ভারত সাক্ষী হয়েছিল এমন কিছু ঘটনার যা দেশের ইতিহাসের অন্যতম অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে পরিচয় পাবে। ৩১ অক্টোবর দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তাঁর দেহরক্ষী ছিল শিখ ধর্মাবলম্বী। এই ঘটনার পরের দিন থেকেই দেশে লেগে গিয়েছিল দাঙ্গার আগুন (Anti-Sikh Riots)। নভেম্বরের ১ থেকে ৩ তারিখ অবধি ভারতবর্ষ সাক্ষী হয়েছিল এক রক্তমাখা ইতিহাসের।

সেই সময় বহু শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষ নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ভিটে-মাটি ছেড়ে পালিয়েছিলেন বিদেশে। প্রচুর মানুষ আমেরিকাতেও চলে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ৩৮ বছর। ১৯৮৪ সাল থেকে যে সব শিখ আমেরিকায় বসবাস করছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা ও সহানুভূতি জানালেন আমেরিকার এক সাংসদ। মার্কিন সংসদে কংগ্রেসম্যান ও সাংসদ ডনাল্ড নরক্রস দক্ষিণ জার্সির শিখ সম্প্রদায়ের প্রতি নিজের সহানুভূতি জানালেন। 

তিনি বলেন, “১৯৮৪ সালের ১ থেকে ৩ নভেম্বরের দাঙ্গায় যে সব শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের সব কিছু হারিয়েছেন, যাঁরা তারপর দক্ষিণ জার্সিতে এসে বসবাস করছেন, তাঁদের সকলের প্রতি আমার সমবেদনা। আমাদের শিখ ভাই বোনেদের আমেরিকার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির প্রতি প্রচুর অবদান রয়েছে।” ভারতে ঘটে যাওয়া সেই ঘৃণ্য ঘটনার ৩৮ বছর পূর্ণ হল এই মাসে। সংসদে সেই কথা তুলে ডনাল্ড বলেন, “আমি দক্ষিণ জার্সির শিখ সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে চাই।”

Sikh in US

এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর প্রতিশোধ নিতে গোটা শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। ৮৪’র দাঙ্গায় অবলীলায় চলেছিল গণহত্যা ও গণধর্ষণ। যা ভারতের ইতিহাসের অত্যন্ত ন্যক্কারজনক এক অধ্যায়। শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর ও ব্যবসাক্ষেত্র ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে হত্যা করা হয়েছিল তাঁদের। এই অত্যাচারের ফলে বহু মানুষ প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আমেরিকায়। তাঁরা বসবাস শুরু করেন দক্ষিণ জার্সিতে।

অন্যদিকে, সংসদে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আর এক কংগ্রেসম্যান জন কার্টার। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার দিকে জোর দিতে চান। দেশে গণতন্ত্র বজায় রাখতে ভারতের ভূমিকারও প্রশংসা করেছেন কার্টার। তিনি মনে করেন, ভারতের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। কার্টারের মতে, প্রথমে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে খুব বেশি সামঞ্জস্য না দেখা গেলেও এখন যথেষ্ট মিল রয়েছে দু’দেশের মধ্যে। কারণ দু’টি দেশই স্বরাজ ও স্বাধীনতার মানে বোঝে।

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর