বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত রবিবার আমেরিকা সিরিয়া থেকে নিজেদের সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেছে। আর এই ঘোষণার পর তুর্কি সিরিয়ার উপর আক্রমণ করে দেয়। এখন পরিস্থিতি ওয়ার্ল্ড ওয়ারের মতো তৈরি হয়েছে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তুর্কি আর সিরিয়ার শত্রুতা বহু পুরনো। আমরা এই ঝামেলা থেকে বাইরে এসেছি। আমি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর আমেরিকা আগের থেকে অনেক শক্তিশালী হয়েছে। যদি তুর্কি যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তাহলে তাঁদের সাবধান হয়ে যাওয়া উচিত। আমরা ওদের উপর এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করব, যেটা এর আগে কোন দেশের উপর জারি করা হয়নি। আরেকদিকে গোটা বিশ্বে তুর্কির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিঅ্যাকশন আসছে। ভারত তুর্কিকে সিরিয়ার স্বয়ংপ্রভুতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
এছাড়াও তুর্কিকে সমস্যা কথাবার্তার মাধ্যমে সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছে। আরেকদিকে ফ্রান্স কড়া ভাষায় তুর্কিকে পরামর্শ দিয়েছে। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাকরন কড়া ভাষায় এই হামলার নিন্দা করেছে, এবং তুর্কিকে নিজেদের ক্ষমতার আওতায় থাকার পরামর্শ দিয়েছে। সিরিয়ায় তুর্কি দ্বারা হামলার আওয়াজ সংযুক্ত রাষ্ট্রেও উঠেছে। সংযুক্ত রাষ্ট্রের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতিরেজ এই হামলা নিয়ে গভীর চিন্তা ব্যাক্ত করেছেন, আর তুর্কিকে সিরিয়ায় সৈন্য হামলা বন্ধ করার আবেদন করেছেন।
তুর্কি সিরিয়ায় অ্যাটাক কেন করল? আসলে আমেরিকা কুর্দি সংগঠনকে ISIS এর বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছিল। কুর্দি যোদ্ধাদের লড়াই করার প্রশিক্ষণ থেকে হাতিয়ার পর্যন্ত আমেরিকা দিয়েছিল। এবার আমেরকা কুর্দি সংগঠনকে আর সাহায্য করতে চায়না। এবার তাঁরা সিরিয়া থেকে সেনা তুলে নিয়েছে, এর আগে যেমন আফগানিস্তান থেকে সেনা তুলে নিয়েছিল ঠিক তেমনই।
আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত একদিক থেকে তুরস্ককে সিরিয়ায় হামলা করার সবুজ সঙ্কেত বলা যেতে পারে। এর মানে এই যে, যতদিন আমেরিকার প্রয়োজন ছিল, ততদিন তাঁরা কুর্দি সংগঠনকে সাহায্য করেছে। আর এবার আমেরিকা ইউজ এন্ড থ্রো নীতি আপন করেছে। তুর্কি এবার সিরিয়ায় আক্রমণ করে লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে বেঘর করে দিচ্ছে, আর তাঁদের প্রাণও কেড়ে নিচ্ছে। এরা সেই তুর্কি, যারা কিছুদিন আগে রাষ্ট্রসংঘে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারতকে মানবতার পাঠ পড়াতে চাইছিল।
এর আগে তুর্কির রাষ্ট্রপতি এরদাগোন ভারতের অভ্যন্তরীণ মামলায় দখলআন্দাজি করার চেষ্টা করছিল। তিনি কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল ভারতের বিরুদ্ধে। আর আজ সেই তুর্কিই সিরিয়ায় হামলা করছে। এখন তাঁদের মানবতা উধাও। তুর্কি সিরিয়ায় এখন রক্তের নদী বইয়ে দিচ্ছে। এখনো পর্যন্ত তুরস্কের হামলায় সিরিয়ায় নিহত হয়েছে ২৭৮ জন কুর্দি। এদের মধ্যে শিশু, মহিলারাও আছেন। এছাড়াও লক্ষ লক্ষ সিরিয়ান তুর্কির হামলায় ঘর ছাড়া। এবার তুর্কির মানবাধিকার কোথায়?