মুসলিম হয়ে বিজেপিকে ভোট, মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : দোষের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন এক মুসলিম মহিলা। সেই ‘অপরাধেই’ রীতিমতো মারধর করে বাড়ি থেকে তাঁকে বের করে দিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে মহিলার ভাইকে খুন করা হবে এই হুমকিও দেওয়া হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে। শেষমেষ আর কোনও উপায়ন্তর না দেখে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শরনাপন্ন হয়েছেন নির্যাতিতা।

বরেলির বড়দরি থানার এজাজ নগরের বাসিন্দা উজমা আনসারি গত বছর জানুয়ারি মাসেই ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ওই এলাকারই তসলিম আনসারিকে। ‘মুসলিম’ হওয়া সত্ত্বেও বিজেপির তিন তালাক বিরোধী আইন প্রণয়ন, বিনামূল্যে রেশন ইত্যাদি প্রকল্প আকর্ষণ করেছিল উজমাকে। ফলে এবছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীকেই ভোট দেন উজমা। তিনি চাপা থাকেনি সেই কথা। পরিবারে জানাজানি হওয়ার পরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আত্মীয় স্বজনরাই।

নির্যাতিতা মহিলা উজমা আনসারি জানিয়েছেন, মামা এবং দেওর দুজনে মিলে বেধড়ক মারধর করেন তাঁকে। দেওর জানিয়ে দেন যে তিনি বিজেপিতে ভোট দিয়েছেন বলে স্বামীও তিন তালাক দেবেন উজমাকে। বিজেপি সরকার যদি তা আটকাতে পারে তো আটকে দেখাক। এমনকি পুলিশের দ্বারস্থ হলে নির্যাতিতার ভাইকে খুন অবধি করার হুমকি দেওয়া হয়। অত্যন্ত টানাটানিতেই সংসার চালান উজমার বাবা তাহির আনসারি। সেই দৈন্যের মধ্যেই মেয়ের সংসারের এহেন সমস্যায় কার্যতই ভেঙে পড়েছেন তাঁরাও।

এহেন ঘটনার পর অবশ্য চুপ থাকেননি উজমা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভির বোন ফারহাত নকভির সঙ্গে দেখা করে পুরো বিষয়টি জানিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করেন তিনি। উল্লেখ্য, এই ফারহাত নকভিই প্রথম উত্তর প্রদেশে তিন তালাক বিরোধী বিলের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন। সমাজকর্মী ফারহাত জানিয়েছেন যে, উজমার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরো বিষয়টিতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথেরও হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন উজমা।

Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর