বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আগামী মার্চ মাসেই শুরু হয়ে যাবে রাজ্যের অন্যতম বড় পরীক্ষা উচ্চমাধ্যমিক (Higher Secondary)। ২০২৬ সালে সেমেস্টার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে পুরনো প্রথায় এটাই রাজ্যের শেষ উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা হতে চলেছে। তার আগেই উচ্চমাধ্যমিকের মার্কশিট ও শংসাপত্র নিয়ে এবার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল শিক্ষা সংসদ। পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন তাই কোনরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ সংসদ। তাই প্রযুক্তি নির্ভর যুগে মার্কশিট বা শংসাপত্রের জালিয়াতি রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
উচ্চ-মাধ্যমিকের (Higher Secondary) মার্কশিটে জালিয়াতি রুখতে বিরাট কড়া সংসদ
জানা যাচ্ছে, জাল মার্কশিট ও শংসাপত্রের বাড়বাড়ন্ত রুখতে এবার জাল নোটের মতই অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে উচ্চ-মাধ্যমিকের (Higher Secondary) মার্কশিটে। সূত্রের খবর এবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিটে থাকবে ‘ইউভি সিকিউরিটি থ্রেট কোড’। এতদিন পর্যন্ত এই পদ্ধতি শুধুমাত্র ভারতীয় মুদ্রার ব্যবহার করা হয়েছে। জাল নোট ধরতেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে এতদিন। যদিও জালিয়াতি রুখতে গত বছর থেকেই মার্কশিটে কিউআর কোডের ব্যবহার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উচ্চ-মাধ্যমিক (Higher Secondary) শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে আমরা সবসময় সতর্ক থাকি। কিউআর কোড-এর ব্যবহার শুরু হয়েছে গত বছর থেকে। পুরো ব্যবস্থাটিকে আরও নিরাপদ করে তুলতেই এবার নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ তিনি জানিয়েছেন পড়ুয়াদের স্বার্থেই এই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ইউভি সিকিউরিটি থ্রেট কোড কি?
নতুন বছরেই উচ্চ-মাধ্যমিকের (Higher Secondary) মার্কশিটে যে ইউভি সিকিউরিটি থ্রেট কোড ব্যবহার করা হচ্ছে, তার সাহায্যে খুব সহজেই বোঝা যাবে সংশ্লিষ্ট মার্কশিটটি আসল নাকি নকল? মার্কশিটের ভিতরে লেখা থাকবে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের আদ্যাক্ষর। কিন্তু এই লেখা খালি চোখে দেখা যাবে না। একমাত্র ইউভি স্ক্যান করলে তবেই ধরা পড়বে ওই লেখা।
জালিয়াতি রুখতে শুধু উচ্চ-মাধ্যমিকেই (Higher Secondary) নয় একাধিক নতুন ব্যবস্থা আনা হচ্ছে মাধ্যমিকেও। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিব সুব্রত ঘোষ এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘যদি সন্দেহ হয় কেউ জাল মার্কশিট নিয়ে ভর্তির চেষ্টা করছেন তাহলে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করেআমরা বলে দেব ওই মার্কশিট জাল কিনা।’
আরও পড়ুন: খরচ ১২ লক্ষ টাকা! একমাত্র শিক্ষিকা পড়াচ্ছেন একজন ছাত্রীকে! কোথায় রয়েছে এই সরকারি স্কুল?
গতবছর নিরাপত্তার জন্য উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সিরিয়াল নাম্বারের উল্লেখ করা হয়েছিল। এই সিরিয়াল নাম্বার ব্যবহার করা হয় ইউনিক কিউআর কোডের মাধ্যমে। মোট ১৪ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভিত্তিক প্রশ্নপত্রের উপর নজরদারি ও নিরাপত্তার জন্য গত বছর থেকে প্রথম আধুনিক ‘এনক্রিপ্টেড কিউআর কোড’ বা বারকোড চালু করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রশ্নপত্রের যাবতীয় তথ্য নিজেদের নজরদারিতে রাখতে পারবে সংসদ।
পরীক্ষা চলাকালীন বা তার আগে কোনো সমস্যা হলে তা খুব সহজে বুঝে যাবে সংসদ কর্তৃপক্ষ। গতবারের মতো এবারও প্রত্যেকটি প্রশ্নপত্রের উপরে ডানদিকে একটি সিরিয়াল নম্বর বা ইউনিক কিউআর কোড থাকবে। এছাড়াও মার্কশিটে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই এবার থেকে পরীক্ষার্থীর নাম, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সহ দেখা যাবে তার ছবি, ঠিকানা সহ অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য।
উল্লেখ্য গত বছর উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার পর জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হয়েছিল এক পড়ুয়া। অভিযোগ ওঠে শুধু মার্কশিটের মূল নম্বরই নয়, পুরো বিষয়ভিত্তিক নম্বরের পরিবর্তন করেছিল সেই পড়ুয়া। পরে ধরা পড়ে যায় এই ঘটনা। তারপরেই নড়েচড়ে বসে উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। যার ফলস্বরূপ এবছর মার্কশিট জালিয়াতি রুখতে ব্যাপক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা সংসদ।