বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র (DA) দাবিতে উত্তাল বাংলা। রাজ্যজুড়ে আন্দোলন-অনশনে নেমেছে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। গত ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল সরকারি কর্মীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের পক্ষ থেকে। এই বনধ রুখতে নবান্ন তরফে সেদিনই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয় চার দফা সই করে নিজেদের উপস্থিতির প্রমান দিতে হবে কর্মীদের। কেউ এই নির্দেশ উপেক্ষা করে আন্দোলনে অংশ নিলে বেতন কাটা হবে বলেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছিল রাজ্য তরফে।
অন্যদিকে, রাজ্যের এই সরকারি নির্দেশনামা ভঙ্গ করে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের (Nazrul University) রেজিস্ট্রার (Registrar) সেইদিনের ধর্মঘটে অনুপস্থিত কর্মীদের পুরো বেতন দিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি সেদিনকার অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার অর্থ মন্ত্রকে পাঠাতে অসহযোগিতা করছেন। এই অভিযোগ তুলেই এবার রেজিস্ট্রারকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিস (Suspend Notice) দিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য (VC) ডক্টর সাধন চক্রবর্তী। খবর সামনে আসতেই শোরগোল।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে গেলে তাকে বাঁধা দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট অফিসার মহেশ্বর মাল্যদাসের বিরুদ্ধে। এরপরই হাতের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা রেজিস্ট্রারকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নোটিস প্রত্যাহারের প্রতিবাদে সরব হয়।
ঘটনার পর, রেজিস্ট্রার অভিযোগ তুলে বলেন, “এই উপাচার্যর অত্যাচারে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও রেজিস্ট্রারই এক বছরের বেশি টেকেন না। উনি অনেক অনৈতিক কাজের সাথে লিপ্ত। অবৈধভাবে গাছ কাটাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় এক উচ্চ অধিকারীককে তার অফিসের মধ্যেই থাকার শোয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ডেভেলপমেন্টে যে সমস্ত কাজ হচ্ছে সেই হিসাবপত্র তিনি ঠিক মতো দেন না। আমি এই সকল অনৈতিক ঘটনার প্রতিবাদ করাতেই বরখাস্তের নোটিস পাঠানো হয়েছে।”
অন্যদিকে, উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী এই বিষয়ে সাফাই দিয়ে বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসের ২০ ও ২১ এবং মার্চের ১০ তারিখ রাজ্য সরকারি কর্মীদের কর্মবিরতি ছিল। ওই দিনগুলি নিয়ে রাজ্য অর্থমন্ত্রকের তরফে বিশেষ নোটিস পাঠানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে সমস্ত কর্মীরা ওই দিনগুলিতে উপস্থিত থাকছেন না তাদের বেতন কিছুটা কাটা যাবে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনামা উপেক্ষা করে অনুপস্থিত সমস্ত কর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার পুরো বেতন দিয়েছেন। পাশাপাশি, অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্টার অর্থ দফতরে পাঠানোর জন্য যে সহযোগিতা দরকার তিনি তা করছেন না। এর জেরেই বাধ্য হয়ে তাকে বরখাস্তের নোটিস দিয়েছি।”