বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই হিজাব বিতর্কে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত। কর্ণাটকের একাধিক ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় দেশ। এমনকি, বিদ্যালয়ে হিজাব পরার দাবিতে আন্দোলনও শুরু করেছিলেন মুসলিম ছাত্রীরা। এদিকে, এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গেরুয়া স্কার্ফ পরে রাস্তায় নেমেছেন হিন্দু পড়ুয়ারাও।
যদিও, পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে ঠিক এইরকমই উস্কানিমূলক আঁচ লেগেছে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও। সম্প্রতি সেখানে ধুতি, পৈতে এবং সিঁদুর পরিহিত কোনো হিন্দুকে রাস্তায় হাঁটতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মৌলবীরা।
এবার তারই প্রতিবাদে শুক্রবার ধুতি পাঞ্জাবি পরে মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানালেন কয়েকশ হিন্দু। মুসলিম মৌলবাদীদের ওই ফতোয়ার বিরুদ্ধে রীতিমতো গর্জে উঠেছেন তাঁরা। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র ও যুব মহাজোটের নেতৃত্বে শুক্রবার রাস্তায় নামেন হিন্দুরা। তাঁরা প্রত্যেকেই পরেছিলেন ধুতি এবং পাঞ্জাবি।
পাশাপাশি, তাঁদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, “মৌলবাদী গোষ্ঠী কর্তৃক প্রকাশ্যে বাংলাদেশের হিন্দু নারীদের শাঁখা, সিঁদুর ও হিন্দু পুরুষদের ধুতি পরা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির প্রতিবাদেই এই ধুতি মিছিল।” ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু করা হয় মিছিল। গোটা শহর জুড়ে চলা এই মিছিলে সামিল হন হিন্দুরা। পাশাপাশি, সেখান স্লোগান ওঠে, “এ দেশটা কারও একার নয়, সকলের।”
এদিকে, এই প্রসঙ্গে ঢাকার ইতিহাসবিদদের একাংশ জানিয়েছেন, সম্প্রীতির মুখোশ পরে বর্তমানে বাংলাদেশে কার্যত একের পর এক হিন্দু নিধন যজ্ঞ চলেছে। কখনওই পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি সেখানকার হিন্দুরা। তবে গতবছর দুর্গাপুজোর সময়ে পুজোর মণ্ডপে কোরান রাখার অভিযোগ তুলে প্রতিমা ভাঙচুর এবং হিন্দুদের খুন ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রীতিমতো গর্জে ওঠে গোটা বিশ্ব।
তারপর থেকেই সেখানে পরিস্থিতি ক্রমশ পাল্টাচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। এবারও সেই ছবিরই পুনরাবৃত্তি ঘটল বাংলাদেশে। মৌলবাদী আক্রমণের মুখে পাল্টা লড়াই জানালেন হিন্দুরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই মুসলিমদের নিয়ে বিশাল জমায়েতের আয়োজন করেন চরমোনাই পীরের দলের কেন্দ্রীয় যুব সভাপতি মৌলানা মহম্মদ নেছারউদ্দিন।
সেখান থেকেই সরাসরি হিন্দুদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন যে, “কর্ণাটকে যদি মুসলিম পড়ুয়াদের স্কুল, কলেজে হিজাব পরে ঢুকতে না দেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের ধুতি, পৈতে পরা চলবে না! এমনকি, মাথায় সিদুঁর দিয়ে রাস্তায় হাঁটতে দেওয়াও হবেনা” শুধু তাই নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে হিন্দুদের কন্ঠ কিভাবে স্তব্ধ করে দিতে হয় সেই পথ মুসলমানরা ভালো করে জানেন বলেও শাসিয়েছিলেন তিনি।