ভিডিও মুছতে কাকুতিমিনতি ‘কালীঘাটের কাকু’র! কী এমন ছিল তাতে? এবার বোমা ফাটাল CBI

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Primary Recruitment Scam) সম্প্রতি তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই (CBI)। সেখানে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যেমন জানতে পেরেছে, প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে শুধুমাত্র অডিও নয়, একটি ভিডিও-ও রেকর্ড করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের কাছে বয়ান দেওয়ার সময় একথা জানিয়েছেন একজন সাক্ষী।

ওই ভিডিও মুছে দেওয়ার অনুরোধ করেন কালীঘাটের কাকু (Primary Recruitment Scam)!

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) শিকড় খুঁজতে মরিয়া সিবিআই। জোরকদমে এই মামলার তদন্ত চলছে। সেই তদন্তসূত্রেই একটি ভিডিও রেকর্ডিংয়ের কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা। কীভাবে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ঘুষের টাকা নেওয়া হতো সেটা ক্যামেরায় রেকর্ড করেছিলেন বলে সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন এই মামলার এক সাক্ষী। তদন্তকারী সংস্থা তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছে।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির (Primary Recruitment Scam) তদন্তে নেমে ওই সাক্ষীকে জেরা করেছিল সিবিআই। তখনই উঠে আসে ঘুষের ভিডিও রেকর্ডিংয়ের কথা। ওই সাক্ষী জানিয়েছেন, সেই ভিডিও মুছে ফেলার জন্য একাধিকবার তাঁকে ফোন করে অনুরোধ করেছিলেন এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু।

আরও পড়ুনঃ নতুন সিরিয়াল শুরু হতেই TRP-তে ওলটপালট! ফুলকি-পরিণীতাদের কী হাল? রইল সম্পূর্ণ তালিকা 

এই দুর্নীতি মামলায় মোট ১০টি ডায়েরি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। চারজন সাক্ষীর থেকে তা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই তাঁদের বয়ানও রেকর্ড করেছে সিবিআই। ওই চারজন সাক্ষী অরুণ হাজরার ‘এজেন্ট’ হিসেবে কাজ করতেন বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ঘুষের টাকা তুলে তাঁরা কালীঘাটের কাকুর (Kalighater Kaku) হাতে তুলে দিতেন।

এমনই একজন এজেন্ট নিজের মোবাইলের ক্যামেরায় ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে সিবিআইয়ের কাছে দেওয়া ওই সাক্ষীর বয়ান উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে, কালীঘাটের কাকুর সহকারী নিখিল হাতির ঘুষ নেওয়ার ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন ওই ব্যক্তি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ (Sujay Krishna Bhadra) নিজে। পরবর্তীতে এই মামলায় সিবিআই ও ইডি সক্রিয় হয়ে ওঠায় একাধিকবার ফোন করে ওই ভিডিও ডিলিট করে দেওয়ার অনুরোধ করেন কালীঘাটের কাকু।

Kalighater Kaku Primary recruitment scam

একাধিক প্রমাণ লোপাটের কথা জানান। সেই সঙ্গেই ঘুষের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়ারও আশ্বাস দেন (Primary Recruitment Scam)। সিবিআইয়ের কাছে ওই সাক্ষী জানিয়েছেন, কালীঘাটের কাকুর বারংবার ‘কাকুতিমিনতি’র পর তিনি ওই ভিডিও ডিলিট করে দেন। উপরন্তু, ‘কাকু’ ওই এজেন্টকে জানিয়েছিলেন, প্রমাণ লোপাট করার জন্য নিজের দু’টি মোবাইল কালীঘাটে আদিগঙ্গায় ফেলে দিয়েছেন।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (Primary Recruitment Scam) ওই সাক্ষী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন, প্রাথমিকের পাশাপাশি উচ্চ প্রাথমিক, কর্ম ও শারীরশিক্ষা, একাদশ-দ্বাদশ সহ একাধিক চাকরির জন্য তিনি প্রার্থী ‘সংগ্রহে’র কাজ করতেন। কারণ তিনি নিজেও চাকরিপ্রার্থী ছিলেন। ঘুষের টাকা না দিতে পারার জন্য তাঁকে প্রার্থী খুঁজে দিতে বলা হয়। তাঁর মতো বহু এজেন্ট এই কাজ করতেন। এভাবেই অরুণ হাজরার মাধ্যমে মোট ৭৮ কোটি টাকা যায় কালীঘাটের কাকুর কাছে। তবে সব প্রার্থীর চাকরি হয়নি। কার কাছ থেকে কেন কত টাকা নেওয়া হয়েছে, সেটা এজেন্টদের ডায়েরিতে লেখা থাকতো বলে খবর।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর