বাংলাহান্ট ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যারা ভাইরাল (Viral) হন তাদের জীবন বদলে যায় এক নিমেষে। রানু মণ্ডল থেকে ভুবন বাদ্যকর বা ইউটিউবের ‘মাখা কাকু’, উদাহরণ বড় কম নেই। কিন্তু তাঁরা জনপ্রিয়তা যত দ্রুত পেয়েছিলেন তেমনি হারিয়েও গিয়েছেন হুট করে। নেটদুনিয়া যেমন মাথায় তুলতে পারে, ঠিক তেমনি মাটিতে নামিয়ে আনতেও বেশি সময় নেয় না। ভাইরাল ‘নন্দিনী দিদি’ (Nandini Didi) এখন থেকেই বুঝতে পারছেন ভাইরাল হওয়ার জ্বালা।
অফিস পাড়ার এক চিলতে ভাতের হোটেলের ‘স্মার্ট দিদি’ নন্দিনী ওরফে মমতা গঙ্গোপাধ্যায় এখন ইউটিউবে ভাইরাল। দলে দলে ফুড ভ্লগাররা ছুটছে দিদির হাতের রান্না খেতে। মাত্র ৩০ টাকা থেকে শুরু ভেজ থালি। দোকানে পাওয়া যায় সবজি থেকে মাছ, মাংস সবই। সঙ্গে একটা জিনিস ফ্রি, নন্দিনী দিদির মিষ্টি হাসি। এর মধ্যেই সেই হাসি যে কতজনকে ঘায়েল করেছে তার ইয়ত্তা নেই। নেটপাড়ার ‘ক্রাশ’এ পরিণত হয়েছেন নন্দিনী দিদি।
সম্প্রতি তাঁর দেখা মিলেছিল ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’এ। সেখানে গিয়েই নিজের জীবনের স্ট্রাগল এবং মানুষের ভালবাসার কথা বলতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়েন তিনি। ভাতের দোকান চালানোর কথা বলতে গিয়ে রচনাকে তিনি জানান, আগে তাঁদের আর্থিক অবস্থা বেশ ভালোই ছিল। ব্যবসা ছিল বাবার। তিনি নিজে ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ছোট দুই বোন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। কিন্তু নোটবন্দির সময়ে সবকিছু বদলে যায়।
ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় নন্দিনীর বাবার। বিক্রি করতে হয় বাড়ি। হাত পড়ে মায়ের গয়নায়। শেষে দৈনিক ২০০ টাকায় ডালহৌসিতে চাকরি নেন নন্দিনীর বাবা। তিনি নিজে কলকাতার বাইরে চাকরি পেয়ে চলে গিয়েছিলেন। এদিকে তাঁর বাবা ভাতের হোটেল খুলেছিলেন বলে জানান নন্দিনী। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ফিরে আসেন তিনি। বাবার পাশে দাঁড়াতে কাজ শুরু করেন ওই ভাতের হোটেলে।
এখন তাঁর বাবা ভোরবেলা সবজি, মাছ এনে দেন। মা তরিতরকারি কাটাকুটি করেন। আর নন্দিনী রান্না করেন আর খাবার পরিবেশনও করেন। তিনি জানান, একমাস আগেও ৩০ জনের জন্য খাবার বানাতেন তিনি। খুব বেশি হলে ২০ জন লোক হত। কিন্তু ভাইরাল হওয়ার পর ৫০-৭০ জন লোক হয় তাঁর। সবার ভালবাসার কথা বলতে গিয়েই চোখে জল চলে আসে নন্দিনীর।
ভিডিওটি শেয়ার হতেই ধেয়ে এসেছে কটাক্ষের ঝড়। অনেকেই দাবি করেছেন, দিদি নাম্বার ওয়ান মিথ্যে প্রচার করে টিআরপি তুলছে। কয়েকজনের দাবি, নন্দিনী আগে বলেছিলেন যে তিনি হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়েছেন। এখন আবার অন্য কিছু বলছেন। কারোর বক্তব্য, এমন অনেক মেয়েই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে স্বার্থত্যাগ করে। তাদের গল্পগুলো তো প্রচার পায় না? একজন রীতিমতো ব্যঙ্গের সুরে লিখেছেন, এবার নন্দিনী দিদিকে নিয়ে একটা বায়োপিক হয়ে যাক!