মাত্র ২০ মিনিটেই সাইকেল হয়ে উঠবে বাইক! ভারতের উদ্ভাবনে মুগ্ধ শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে সাইকেল যে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। স্বাভাবিকভাবেই, সাইকেল আমরা কম-বেশি সকলেই চালিয়েছি। সাইকেল চালাতে গিয়ে প্যাডেল করার সময়ে আমাদের প্রায়ই মনে হয় যে, যদি এটি এমন কিছু ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালানো যেত তাহলে খুবই ভালো হয়।

তবে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। তাই সাইকেল আরোহীদের ইচ্ছে পূরণ করে এবার আমাদের দেশেই তৈরি হয়েছে এমন একটি ডিভাইস যা সাইকেলে লাগালেই তা তৎক্ষণাৎ হয়ে যাবে মোটরসাইকেল! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এইরকমই এক ঘটনা ঘটিয়েছেন গুরসৌরভ সিং নামের এক ব্যক্তি।

এই অনন্য উদ্ভাবনে স্বাভাবিকভাবেই চমকে গিয়েছেন সকলে। পাশাপাশি, অভিনব এই আবিষ্কার দেখে শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রা এতটাই মুগ্ধ হয়েছেন যে, তিনি এতে বিনিয়োগ করারও প্রস্তাব দিয়েছেন৷ জানা গিয়েছে, গুরসৌরভ সিং “ধ্রুব বিদ্যুৎ” নামে একটি কোম্পানি চালান। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানা গিয়েছে, তিনি বিভিন্ন বৈদ্যুতিক পণ্যের উপর গবেষণা করে সেগুলির মানোন্নয়ন করেন।

এভাবেই গুরসৌরভ বর্তমানে এমন একটি পণ্য তৈরি করেছেন, যার দ্বারা সাধারণ সাইকেলকে একটি মোটর এবং ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক সাইকেলে রূপান্তরিত করা যায়। এর জন্য সাইকেলের কোনো পরিবর্তন করতে হয়না। বরং প্যাডেলের উপরে একটি নাট বোল্ট দিয়ে শক্ত করে এই ডিভাইসটিকে আটকে দিলেই কাজ করতে শুরু করবে এটি।

ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে টুইটারে। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, এই ডিভাইসটি লাগানোর পর সাইকেলে প্যাডেল করার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু তাই নয়, এর ফলে সাইকেল সর্বোচ্চ ২৫ কিলোমিটার বেগেও চলতে পারে। পাশাপাশি, ১৭০ কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করা ছাড়াও একবার চার্জে, এটি ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে।

রাস্তা যতই খারাপ হোক না কেন এই ডিভাইসের ফলে সাইকেল স্বচ্ছন্দে চলতে পারে সর্বত্র। সবথেকে বড় কথা হল আগুন ও জল এই ডিভাইসের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। এমনকি, কাদাতেও চলতে পারে এটি।

এই প্রসঙ্গে ধ্রুব বিদ্যুতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, মাত্র ২০ মিনিটেই এই ডিভাইস লাগানো যাবে সাইকেলে। এয়ারক্রাফ্ট গ্রেড অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি এই যন্ত্রটি ওজনে হালকা এবং এতে মরচেও পড়ে না। এতে একদিকে ব্যাটারি চার্জ করার অপশন রয়েছে অন্যদিকে ইউএসবি-এর মাধ্যমে কানেক্ট করে ফোনও চার্জ করতে পারবেন আরোহীরা।

কোম্পানি সূত্রে আরও দাবি করা হয়েছে যে, ২০ মিনিট প্যাডেল করার পর ব্যাটারি ৫০ শতাংশ চার্জ হতে সক্ষম এই যন্ত্রে। পাশাপাশি, এটিতে একটি ব্যাটারি সূচক রয়েছে যা ব্যাটারি কম হওয়ার বিষয়ে তথ্য প্রদান করবে আরোহীদের। মোটরসাইকেলের মতো এতে গতিও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়াও, ডিভাইসটি চালু এবং বন্ধ করার জন্য একটি বোতামও রয়েছে।

এদিকে, গুরসৌরভের এই উদ্ভাবনে মুগ্ধ হয়েছেন ভারতের অন্যতম সফল শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রা। শনিবার তিনটি টুইটের মাধ্যমে এর প্রশংসা করেছেন তিনি। আনন্দ লিখেছেন, বিশ্বে মোটরসাইকেলের মতো সাইকেল বানানোর অনেক ডিভাইস আছে। তবে এর ছোট ডিজাইন, কাদায় কাজ করার ক্ষমতা এবং ফোন চার্জ করার সুবিধা এটিকে বিশেষ করে তুলেছে। এতে বিনিয়োগ করলে গর্ববোধ করবেন বলেও জানান তিনি। আনন্দ মাহিন্দ্রার এই টুইটের পর ধ্রুব বিদ্যুত কোম্পানি টুইটারেই তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর