বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রথমে তাদের ঘিরে ফেলা হয়। তারপর চলে বেধড়ক মার। কোনও ভাবে ঘেড়াও এড়িয়ে দে দৌড়। কথায় বলে, চাচা আপনা প্রাণ বাঁচা! পালাতে গেলেই তাড়া। চোঁ-চাঁ দৌড়ে কোনও মতে বাঙ্কারে ঢুকে ‘আপনা প্রাণ’ বাঁচায় চিনের ‘সাহসী দুর্জেয়’ লালফৌজ। ঠিক এভাবেই গত ৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে অরুণাচলপ্রদেশের (Arunachal Pradesh) তাওয়াঙে ‘চোরের মতো ঢুকে আসা’ চিন সেনাদের (PLA) উচিত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় সেনার (Indian Army)। তাওয়াঙে মোতায়েন ভারতীয় সেনাকর্তাদের দাবি, প্রায় ২০-২৫ মিনিট ধরে চলে হাতাহাতি লড়াই।
২০২০-তে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান সংঘর্ষ থেকে শিক্ষা নেয় ভারতীয় সেনা। তাই এবার আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন তাঁরা। ফলে চিনের লালফৌজ (PLA) সেভাবে কিছুই করতে পারেনি। এই ঘটনায় পিএলএ-র অন্তত ২২ জন জওয়ান গুরুতর জখম হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। এই সংঘর্ষে জখন হন ভারতের ছ’জন জওয়ানও।
ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, দু’দিন আগেই এই এলাকায় টহল দিতে গিয়েছিল বায়ুসেনার ২টি সুখোই যুদ্ধবিমান। চিন যে বড় রকমের কোনও হামলার ছক কষছে, তা বায়ুসেনার পক্ষ থেকে আগে থেকেই সতর্ক করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, তাওয়াঙের ইয়াংসে সেনা পোস্টকে চিন নিশানা করে করতে পারে বলেও জানানো হয়। এই তথ্য হাত পাওয়ার পরই পাহাড়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৫০ জন জওয়ানের একটি বাহিনী নিয়ে ওৎ পেতে বসেছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনী।
তাওয়াঙে মোতায়েন সেনা অফিসারদের দাবি করেন, ৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রায় ৩০০ সেনার একটি বাহিনী নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (Line of Actual Control) বা LAC পেরিয়ে ভারতের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে লালফৌজ। পরিকল্পনা ছিল আগে থেকেই, অল্প কয়েকজন জওয়ানকে চিনা সেবার সামনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা শত্রু জওয়ানদের বাধা দিলে শুরু হয় কথাকাটি। ওই সময় তারা ভারত ও ভারতীয় সেনাকে নিয়ে গালিগালাজ শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয় হাতাহাতি। সংঘর্ষ শুরু হতেই পাহাড়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ভারতীয় সেনার বাকি জওয়ানরা উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন শত্রুর উপর। কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারদিক থেকে ঘিরে ভারতীয় সেনারা। তারপর চলে এলোপাতাড়ি পাথরবৃষ্টি। সঙ্গে কাঁটা লাগানো লাঠি দিয়ে বেদম মার। বেগতিক বুঝেই কোনও মতে প্রাণ বাঁচিয়ে নিজেদের বাঙ্কারের দিকে দৌড় লাগায় চিনের ‘অজেয়’ জওয়ানরা। তাতেও নিস্তার নেই। তাড়া করা শুরু করেন ভারতীয় জওয়ানরা।
https://twitter.com/hussain_imtiyaz/status/1602704659487105024?s=20&t=4HENdtIF9D3rgJHdb9rIRQ
ভারতের দশাসই চেহারার সেনাদলকে তাড়া করে বাঙ্কারের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ঘাবড়ে যায় চিন। এই বুঝি নিজেদের পোস্টই হারাতে হয়। এই ভয়ে আকাশে দিকে তাক করে গুলি ছোড়ে তারা। তৈরি ছিল ইন্ডিয়ান আর্মিও। পাহাড়ের মধ্যে পজিশন নিয়ে নেয় ভারতীয় সেনা। তাদের ফাঁদ ভারতীয় সেনা বুঝে গেছে এটা জানতে পেরেই লাউডস্পিকার বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলে চিন হয়। সম্মত হয় ভারতও। এই গোটা অপারেশেন ভারতীয় সেনার ২টি রেজিমেন্টের জওয়ানরা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর চিনা জওয়ানদের অধিকাংশেরই মাথা ফেটেছে, পাশাপাশি কব্জি ও কাঁধের হাড়ও ভেঙেছে বলে জানা গিয়েছে।