লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া, এক পায়ে ভর দিয়ে দুই কিমি দূরের স্কুলে যায় পারভেজ! ভাইরাল ভিডিও

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মানসিক জেদ এবং কোনো কাজের প্রতি দৃঢ় নিষ্ঠা থাকলে সব রকম বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে সক্ষম হয় মানুষ। নিজের জীবনের প্রতিটি পদে পদে সেই কথাটি যেনো প্রমাণ করে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীরের হান্দওয়ারারের এক প্রতিবন্ধী বালক। একটি পা নেই তার, অথচ সেই প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখে প্রতিদিন প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে স্কুলে পৌঁছে যায় পারভেজ নামের বালকটি।

সম্প্রতি তার এই জীবন যুদ্ধের কথা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর পরেই এক সাক্ষাৎকারে পারভেজ জানায়, “আমাদের এখানে রাস্তা ভালো নয়, তবে আমাকে স্কুলে যেতেই হবে। সেই কারণে এক পায়ে ভর দিয়েই স্কুলে যাই। তবে যদি আরেকটি কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়া যায়, তাহলে হাঁটতে সুবিধা হবে।” আর এই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরেই তার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন জয়পুর ফুট ইউএসএ-র প্রধান প্রেম ভান্ডারী।

বর্তমানে বালকটিকে বিনামূল্যে কৃত্রিম অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে প্রেম ভান্ডারী বলেন, “পারভেজের জীবনযুদ্ধের ঘটনাটি শোনার পর আমি ওর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং বর্তমানে তাঁকে বিনামূল্যে কৃত্রিম অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের নওগায় একটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে পারভেজ। ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য বড় ডাক্তার হওয়া। এই প্রসঙ্গে পারভেজের স্কুল শিক্ষক বলেন, “পারভেজ খুব পরিশ্রম করে। পড়াশোনা ছাড়াও অন্যান্য কার্যকলাপেও যোগদান করে ও। আমরা চাই ও সামনের পথে এগিয়ে যাক।”

ছেলের প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে পারভেজের বাবা গোলাম আহমেদ বলেন, “ও খুব ছোট বয়সে এক অগ্নিকাণ্ডের কারণে পা হারায়। একেই আমার স্ত্রী হার্টের রোগী, তার ওপর পারভেজের সঙ্গে যখন এই ঘটনাটি ঘটে, তখন আমি বাড়িতে ছিলাম না।” তিনি আরো বলেন, “পারভেজের চিকিৎসার জন্য তিন লক্ষ টাকার প্রয়োজন ছিল আর সেই কারণে আমি সমস্ত সম্পত্তি বেচতে বাধ্য হই। বর্তমানে আমি সরকারের কাছে আমার ছেলেকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করতে চাই। ও পড়াশোনা যেমন ভালো করে, ঠিক তেমনি ভাবে খেলাধুলার সঙ্গেও জড়িত। আমি চাই ও যেন জীবনের সব লক্ষ্যে সফল হয়।”


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর