বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে মহিলাদের পুরুষদের সমান অধিকারের দাবিতে লড়াই চলছে বছরের পর বছর ধরে। মহিলাদের ক্ষমতায়ন, স্বাধীনতা নিয়ে সরব হচ্ছেন নারী-পুরুষ সকলেই। গার্হস্থ হিংসার ক্ষেত্রেও কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশগুল। সেখানে একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে স্ত্রীদের পেটানোর নিদান দিতে শোনা গেল এক ‘নারী ও পরিবার কল্যাণ’ মন্ত্রীকে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তিনিও একজন মহিলা। সেই মন্ত্রীর স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বার্তাকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তাঁর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববাসী।
সিতি জইলাহ ইউসুফ মালয়েশিয়ার নারী ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। সম্প্রতি নিজের ইন্সটাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। দুমিনিটের এই ভিডিওতে মালয়েশিয়াবাসীকে সাংসারিক পরামর্শ দিতে দেখা যায় তাঁকে। সেখানেই স্ত্রীরা অবাধ্য হলে কীভাবে শাসন করতে হয় সেই সম্পর্ক পুরুষদের একাধিক টিপস দেন তিনি। প্রয়োজনে স্বামী, স্ত্রীকে মারতেই পারেন একথাও বলতে শোনা যায় তাঁকে সেই ভিডিওতে।
JAG calls for immediate resignation of Siti Zailah Mohd Yusoff, Deputy Minister of Women for her video message in support of violence against women. pic.twitter.com/WG7Bpt6mXP
— TENAGANITA (@Tenaganita) February 14, 2022
ওই মন্ত্রী বলেন, ‘যে সব মহিলা কথা শোনেন না তাঁদের অনুশাসনে বাঁধতে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেওয়া উচিত স্বামীর। তাতে কাজ না হলে তিন দিন আলাদা বিছানায় শোয়া উচিত। এরপরেও কথা না শুনলে স্ত্রীর গায়ে হাত দিতে পারেন স্বামী। মারধরও করতে পারেন। এর ফলে স্ত্রী অনুভব করবেন স্বভাব পরিবর্তন না হলে স্বামী কতখানি কঠিন রূপ ধারণ করতে পারেন।’
‘বাধ্য স্ত্রী’ হয়ে ওঠার জন্য মহিলাদেরকেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘স্বামী অনুমতি দিলে তবেই তাঁর সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা বলুন। স্বামীর মেজাজ বুঝে, তাঁর খাওয়া দাওয়া সম্পুর্ণ হওয়ার পর, যখন স্বামী অবসর সময় কাটাচ্ছেন তখন তাঁর সঙ্গে কথা বলুন। কথা বলার আগে অতি অবশ্যই অনুমতি চেয়ে নেবেন।’
View this post on Instagram
তাঁর এই ভিডিও সামনে আসার পরই তোলপাড় পড়ে গেছে বিশ্বজুড়ে। নিন্দার ঝড় উঠেছে পৃথিবীর প্রতিটা কোনায়। কারও কারও দাবি মহিলাদের মানবাধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ইউসুফ। কেউ আবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মহিলা-পুরুষ-শিশু বা পশু কারও গায়ে হাত দেওয়ার বা আঘাত করার অধিকার পৃথিবীর কারও নেই। একই সঙ্গে তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন নেটিজেনরা। মালয়েশিয়ার একটি নারী সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে এহেন বক্তব্যে। মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেয় সেদেশের প্রশাসন এখন সেটাই দেখার।