বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাম নবমীর শোভাযাত্রায় দেশের ছয়টি রাজ্যে ব্যাপক তোলপাড় হয়েছে। গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক এবং মধ্যপ্রদেশে দুর্বৃত্তরা মিছিলে পাথর ছুঁড়েছে। এতে তুমুল হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। গুজরাটে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দিল্লির JNU ক্যাম্পাসে রাম নবমীতে আমিষ খাবার নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে অনেক পড়ুয়া আহত হয়েছে। আসুন জেনে নিই, কী হয়েছে কোন রাজ্যে?
গুজরাটের সবরকাঁথা, আনন্দ ও দ্বারকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে দুর্বৃত্তরা। সবরকাঁথায় রাম নবমীতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে হামলা হয়েছে। বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আনন্দ জেলায় শোভাযাত্রার সময় পাথর ছোঁড়ার পর হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বারকায়ও মিছিলকে নিশানা করে দুষ্কৃতীরা। হট্টগোল সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ ১৫ জনকে আটক করেছে। তিন জেলাতেই মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ।
#Gujarat: Stone-pelted on peaceful religious procession on #Ramanavami in #Himatnagar area of #Sabarkantha district. Many vehicle vandalized in clash & police personnel fired tear gas to control the situation. pic.twitter.com/tFJhL0JF8J
— Nikhil Choudhary (@NikhilCh_) April 10, 2022
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায় রাম নবমীর শোভাযাত্রার সময় তুমুল হাঙ্গামা হয়। মাচানতলার পেট্রোল পাম্প মোড়ের কাছে অবস্থিত মসজিদের সামনে দিয়ে যাওয়া শোভাযাত্রায় দুর্বৃত্তরা পাথর ছোঁড়ে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুভাষ সরকার বলেছেন যে “বাঁকুড়ায় রাম নবমী মিছিলে পাথর ছোঁড়া হয়েছিল। এটা রাজনৈতিকভাবে করা হয়েছিল। তারা আমার গাড়িতেও পাথর ছুঁড়েছে। আমি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করছি।” পাথর ছোঁড়ার পর যে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে তা থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও হাওড়াতেও রাম নবমীর শোভা যাত্রায় হামলার খবর রয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগা জেলার হিরাহি ভোক্তা গার্ডেন এলাকার কাছে রাম নবমীর মিছিলে পাথর ছোঁড়া হয়। মিছিলে অংশ নেওয়া রামভক্তদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়। এই হামলায় ১৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। গোটা জেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শোভাযাত্রাটি একটি কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় অন্য সম্প্রদায়ের কিছু লোক হামলা চালায়।
মধ্যপ্রদেশের খারগোনেও রাম নবমীকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। শহরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল, চারটি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে বলে জানা যায়। শোনা যাচ্ছে, রামনবমীর শোভাযাত্রা শুরু হতেই উপদ্রবীরা ডিজে নিয়ে হাঙ্গামা শুদু করে দেয়।। তাঁরা শোভাযাত্রায় পাথর ছোঁড়ে। এর পর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুর্বৃত্তদের হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। দুষ্কৃতীরা শীতলা মাতার মন্দিরও ভাঙচুর করেছে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত তালাব চক, গৌশালা মার্গ, মতিপুরা, স্টেডিয়ামের পিছনে, টাওয়ার এলাকায় কারফিউ জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
রাম নবমীর পূজা নিয়ে JNU-তে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এবিভিপি এবং বাম ছাত্রদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় কয়েকজন পড়ুয়া আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, কিছু ছাত্র কাবেরী হোস্টেলে রামনবমীতে পুজো করছিল। সেই সময় বামপন্থী ছাত্র নেতারা রোজা ইফতার পার্টি শুরু করেন বলে অভিযোগ। সেখানে আমিষ খাবার নিয়ে পার্টি করা হয়। এই নিয়ে রাম নবমীর পূজারত কয়েকজন পড়ুয়া প্রতিবাদ করেন। তাঁরা বলে, পূজার সময় আমিষ আনা ঠিক নয়। এরপরই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অনেক পড়ুয়া আহত হয়। আপাতত এই ঘটনায় এফআইআর নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেএনইউ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কর্ণাটকের কোলারে রাম নবমীর মিছিলে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পাথর ছোঁড়ার পর পরিবেশ কিছুটা খারাপ হলেও পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। এখন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।