বাংলাহান্ট ডেস্ক : সবেমাত্র পেরিয়েছে অষ্টম শ্রেণীর গণ্ডি। আর তারপরেই সংসারের হাল ধরতে সকাল থেকে রাত খেটে চলেছে গায়েত্রী। জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষায় বসার আগেই বাস্তব জীবনের পরীক্ষা দিতে বাধ্য হল ছোট্ট মেয়ে গায়েত্রী (Gayatri)। বাস্তবে যে জীবন কতটা কঠিন তা এইটুকুনি বয়সেই বুঝে গেছে সে। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে সকাল থেকে রাত সে চালাচ্ছে টোটো (Toto)। শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে ঘটেছে এমনটাই।
দুই কন্যা সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়েছিল এক টোটো চালকের সুখের সংসার। তবে হঠাৎ করেই নড়ে যায় ভীত। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে বসেই দিন পার হচ্ছে ওই টোটো চালকের। এই পরিস্থিতিতে সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিল নবম শ্রেণীর ছোট্ট মেয়ে গায়েত্রী।
যদিও প্রায় দু’বছর আগে থেকেই টোটো চালাচ্ছে সে। ঘুম থেকে উঠে মুখে কিছু না দিয়েই সকাল বেলায় টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়ে গায়েত্রী। এরপর দুপুরে ফিরে কোন রকম নাওয়া খাওয়া সেরেই টোটো নিয়ে পয়সা উপার্জন এর আশায় তাকে আবার বেরিয়ে পড়তে হয়। এভাবেই চলছিল দিন গুজরান। তবে বর্তমানে বন্ধ সেই রাস্তাও।
খারাপ হয়ে গেছে টোটোর ব্যাটারি। তাই বর্তমানে আর টোটো চালাতে পারছে না ছোট্ট মেয়ে গায়েত্রী। সকলের কাছে এখন তার একটাই আবেদন, কেউ যদি তার টোটোটা সারিয়ে দেয় তাহলে আবার পরিবারের মুখে দুবেলা অন্য তুলে দিতে পারবে সে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে কেঁদে ভাসালেন গায়েত্রীর বাবা-মা। তাদের কথায়, ‘ছোট্ট এই মেয়েটাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। তবুও আমাদের এমন দুরাবস্থা যে এক বেলা খাবার জুটলে আর এক বেলা জোটে না। এমনকি প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনা অসম্ভব হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে আবার খারাপ হয়ে গেছে টোটো। এখন কিভাবে দিন গুজরান হবে সেটাই বুঝতে পারছি না’। কবে ফিরবে সুদিন? এখন সেই অপেক্ষায় গায়েত্রীর পরিবার।